ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে ৮ নভেম্বর থেকে শুরু হবে তীর ২৪তম এশিয়ান আরচ্যারী চ্যাম্পিয়নশিপস ২০২৫। আসরটি দুটি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে আরচ্যারীর এই মর্যাদার ইভেন্ট। ২০১৭ ও ২০২১ সালে সফলভাবে আয়োজন সম্পন্ন করেছিল বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশন।
শনিবার (৮ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এশিয়ান আরচ্যারীর এই বৃহৎ আসর শেষ হবে ১৪ নভেম্বর। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় স্টেডিয়ামে ৮ থেকে ১২ নভেম্বর এবং আর্মি স্টেডিয়ামে ১৩ ও ১৪ নভেম্বর।
এবারের আসরে মোট ৩০টি দেশের আরচ্যাররা অংশ নিবেন। রিকার্ভ ও কম্পাউন্ড মিলিয়ে মোট ১০টি ইভেন্টে হবে পদকের লড়াই। সব মিলিয়ে ২০৯ জন প্রতিযোগী এবারের আসরে অংশ নিতে যাচ্ছে (আরচ্যারের সংখ্যা বাড়তে পারে)।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১১৯ পুরুষ ও ৯০ মহিলা আরচ্যার। রিকার্ভ ইভেন্টে ১১৭ ও কম্পাউন্ড ইভেন্টে ৯২ জন আরচ্যার অংশ নিবেন। অংশগ্রহণকারী আরচ্যারদের জন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
২৪তম এশিয়ান আরচ্যারী চ্যাম্পিয়নশিপস-২০২৫-এর পাশাপাশি ৮ নভেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ওয়ার্ল্ড আরচ্যারী এশিয়া কংগ্রেস ও নির্বাচন। বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশনের সদস্য কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল এশিয়ান আরচ্যারী ফেডারেশনের সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন। ৩২টি দেশের প্রতিনিধিরা কংগ্রেসে অংশ নিবেন।
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তীর ২৪তম এশিয়ান আরচ্যারী চ্যাম্পিয়নশিপস এবং কংগ্রেস নিয়ে কথা বলেন বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশনের সভাপতি ও সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ, তীর ২৪তম এশিয়ান আরচ্যারী চ্যাম্পিয়নশিপসের লোকাল অর্গানাইজিং কমিটির চেয়ারম্যান কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল, সিটি গ্রুপের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক জাফর উদ্দিন সিদ্দিকী।
সভাপতি ড. মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, “এবার যে আর্চারির কংগ্রেস হবে। উনি (কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল) যদি ইলেক্টেড হন, তাহলে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এশিয়ান আরচ্যারীর অফিস চার বছরের জন্য বাংলাদেশে আসবে। আমরা খুব আশাবাদী।”
তিনি আরও বলেন, “এবারের আরচ্যারী চ্যাম্পিয়নশিপে প্রতিকূল পরিস্থিতিও ফিলিস্তিন এসেছে, লেবানন এসেছে, ভারত-পাকিস্তান এসেছে। বন্ধু দেশ নেপাল ও আফগানিস্তান আসছে। আমরা পুরো টুর্নামেন্টের জন্যই জাতীয় স্টেডিয়াম বরাদ্দ পেয়েছিলাম। ফুটবল ফেডারেশনের একটা প্রোগ্রাম থাকায় দুই দিন আমরা বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে যাচ্ছি এই আয়োজন করতে।”
কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল বলেন, “ফিলিস্তিনের অসহায়ত্বের কথা আপনারা জানেন। অন অ্যারাইভাল ভিসার মাধ্যমে আনার ব্যবস্থা করছি তাদের। লেবানন, সিরিয়া আছে, ইয়েমেন আছে, আরও অনেক দেশ আছে তাদের এলওসির মাধ্যমে বিশেষ প্রনোদনা দিয়ে আনা হচ্ছে। এবার যদি আমাদের ভালো সাফল্য আসে, তাহলে আমরা আরেক ধাপ এগিয়ে যাব। আমরা চাই সুন্দর একটা চ্যাম্পিয়নশিপস আয়োজন করতে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যখন ২০২৩ সালে ব্যংককে বিড করি। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ভারত ও চীন। ভারত আমাদের ছেড়ে দিয়েছিল। চীন অনেক শক্তিশালী দেশ, ওরা সব কিছু পারে, ওদের সবকিছু আয়োজনের সামর্থ্য ভালোভাবে আছে, কিন্তু ভোটাভুটিতে আমরা বেশি ১৪-১০ ভোট পেয়ে এই আসরের আয়োজক হয়ে গেলাম।”
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, “সবার অনুরোধে আমি এবার সভাপতি পদে দাঁড়িয়েছি। এর আগে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলাম সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে। সবার সহযোগিতা পেলে, দোয়া পেলে আশা করি, এবার এশিয়ার সভাপতি হতে পারবো, ইনশাআল্লাহ। আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন।”
কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল বলেন, “আপনারা দোয়া করবেন, এবারের আসরে আমাদের সাফল্যের ধারা যেন অব্যাহত থাকে। এর আগে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে আমরা অনেক পদক পেয়েছি। সোনা ৪২টি, রুপা ৫১টি ব্রোঞ্জ ৫৪টির বেশি পেয়েছি। আমরা অবশ্যই চাইবো এবার বাংলাদেশ সাফল্য পাক, সেমি-ফাইনাল পর্যন্ত যদি যেতে পারি। যদি সেমি-ফাইনাল টপকাতে পারি, তাহলে আমরা আশা করি, ফাইনালেও ভালো করবো।”
সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ বলেন, “আপনারা জানেন, এত বড় টুর্নামেন্ট বাংলাদেশে আর কখনও হয়েছে কি-না। এটা আমাদের এবং বাংলাদেশের জন্য গর্ব। সরকার এ বিষয়ে সহযোগিতা করছে।”
