পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট জিতে ইতিমধ্যে রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও স্বপ্ন দেখছে টাইগাররা। প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার স্বপ্ন নিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করেছে নাজমুল হোসেন শান্তরা।
হাসান মাহমুদ এবং নাহিদ রানার বোলিং তোপে বাংলাদেশের সামনে ১৮৫ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছে পাকিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে আলো স্বল্পতা এবং বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে বিনা উইকেটে ৪২ রান করেছেন দুই টাইগার ওপেনার। ফলে জয়ের জন্য শেষ দিনে বাংলাদেশের প্রয়োজন ১৪৩ রান।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে নতুন ইতিহাস রচনার স্বপ্ন নিয়ে চতুর্থ দিন শেষে ব্যাট হাতে জাকির হাসান ৩১ এবং সাদমান ইসলাম ৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন। এ ম্যাচ জিতলেই পাকিস্তানকে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করবে বাংলাদেশ।
এছাড়া দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ড্র হলেও সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ। কারণ সিরিজের প্রথম টেস্টে পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারিয়েছিল টাইগাররা।
প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ২৭৪ রানের জবাবে তৃতীয় দিন ২৬২ রানে অল আউট হয়েছিল বাংলাদেশ। ১২ রানের লিড নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দিন শেষে ২ উইকেটে ৯ রান তুলেছিলো পাকিস্তান। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ২১ রানে এগিয়ে ছিলো স্বাগতিকরা।
সোমবার চতুর্থ দিনের নবম ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট উপহার দেন পেসার তাসকিন আহমেদ। মিড অফে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দারুণ ক্যাচে ২০ রানে ফিরেন পাকিস্তানের ওপেনার সাইম আইয়ুব। ১৭তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমণে এসে তৃতীয় ডেলিভারিতেই উইকেট তুলে নেন পেসার নাহিদ রানা। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ২৮ রানে বিদায় নেন অধিনায়ক শান মাসুদ।
মাসুদকে শিকার করে উজ্জীবিত হয়ে উঠেন রানা। পরের দুই ওভারে দারুন দু’টি ডেলিভারিতে দুই উইকেট নেন তিনি। অফ-স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপে সাদমান ইসলামকে ক্যাচ দেন ১১ রান করা বাবর আজম। বাবরের বিদায়ে ক্রিজে এসে প্রথম বলেই স্লিপে সাদমানকে ক্যাচ দিয়েছিলেন উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান। ক্যাচ ধরতে পারেননি সাদমান। নিজের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে শাকিলকে ২ রানে বিদায় দেন রানা। উইকেটের পেছনে শাকিলের ক্যাচ নেন লিটন দাস।
রানার তিন ওভারে ৩ উইকেটে ৮১ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। দলকে চাপমুক্ত করতে সপ্তম উইকেটে ৫৫ রানের জুটি গড়েন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সালমান আঘা। এই দুই ব্যাটার উইকেটে সেট হয়ে যাওয়ায় স্বস্তি ফিরেছিলো পাকিস্তান শিবিরে। এ অবস্থায় পাকিস্তানকে জোড়া ধাক্কা দেন আগের দিন ২ উইকেট নেওয়া পেসার হাসান মাহমুদ। ৩৭তম ওভারের পঞ্চম বলে রিজওয়ানকে ৪৩ রানে ও পরের ডেলিভারিতে মোহাম্মদ আলিকে শূণ্যতে সাজঘরে পাঠান হাসান।
১৪৫ রানে নবম ব্যাটার হিসেবে আবরার আহমেদকে ২ রানে আউট করেন রানা। এতে দেড়শর নীচে গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে পাকিস্তান। কিন্তু শেষ ব্যাটার মির হামজাকে নিয়ে পাকিস্তানের রানের চাকা সচল করেন সালমান। হামজাকে ৪ রানে থামিয়ে পাকিস্তানের ইনিংসে ১৭২ রানে শেষ করেন হাসান। এতে বাংলাদেশের সামনে জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ১৮৫ রানের।
হামজাকে আউট করে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় ম্যাচে প্রথমবারের মত ৫ উইকেট শিকার করেন হাসান। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন সালমান।
হাসান ৪৩ রানে ৫টি ও রানা ৪৪ রানে ৪টি উইকেট নেন। বাকী এক উইকেট নিয়েছেন আরেক পেসার তাসকিন। এই প্রথমবারের মত নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এক ইনিংসে প্রতিপক্ষের সব উইকেট শিকার করলেন বাংলাদেশের পেসাররা।
১৮৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে পাকিস্তানের বোলারদের উপর চড়াও হন বাংলাদেশ ওপেনার জাকির হাসান। ২টি করে চার-ছক্কায় জাকিরের ২৩ বলে ৩১ রানে ৭ ওভারে ৪২ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। কিন্তু সপ্তম ওভারের পর আলোর স্বল্পতা ও বৃষ্টির কারণে আগেভাগেই দিনের খেলার ইতি ঘটে। জাকির ৩১ ও আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম ৯ রানে অপরাজিত আছেন।