দক্ষিণ আফ্রিকার বিদায়, সেমির স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো পাকিস্তান

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ১১:৫৮ পিএম, ২৩ জুন ২০১৯
দক্ষিণ আফ্রিকার বিদায়, সেমির স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো পাকিস্তান

ছবি : গেটি ইমেজ

টিকে থাকার ম্যাচে ঠিকই জ্বলে উঠল পাকিস্তান। বিশ্বকাপে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪৯ রানে হারিয়ে সেমিতে ওঠার সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখলো পাকিস্তান। অন্যদিকে এ ম্যাচ হেরে সেমিতে ওঠার সব পথই বন্ধ হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার।

বিশ্বকাপের ৩০তম ম্যাচে রোববার (২৩ জুন) টস জিতে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ৩০৮ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। জয়ের জন্য ৩০৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা ৯ উইকেটে ২৫৯ রান করলে পাকিস্তান ৪৯ রানের জয় পায়।

ব্যাটে-বলে পাকিস্তানের সামনে পাত্তাই পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট হাতে হারিস সোহেল আর বাবর আজম অসাধারণ ব্যাটিং করে পাকিস্তানকে বড় স্কোর এনে দেন। বল হাতে মোহাম্মদ আমির, শাদাব খান আর ওয়াহাব রিয়াজ দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৫৯ রানে আটকে দিয়ে জয় তুলে নেন। এটি পাকিস্তানের দ্বিতীয় জয়। আর এ জয়ে ৬ ম্যাচে বাংলাদেশের সমান ৫ পয়েন্ট নিয়ে ৭ নম্বরে ওঠে সেমির আশা টিকিয়ে রাখলো পাকিস্তান।

জয়ের জন্য ৩০৯ রানের কঠিন টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। মাত্র ৪ রানে দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার হাশিম আমলাকে হারান। ব্যক্তিগত মাত্র ২ রানে আমলার উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তানের বোলিংয়ের চমকটা দেন মোহাম্মদ আমির।

দলীয় ৪ রানের প্রথম উইকেট হারানো দলকে এগিয়ে নিতে ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নামা অধিনায়ককে নিয়ে জুটি করেন ওপেনার কুইন্টন ডি কক। এ জুটিই দলকে এগিয়ে নেয় সামনের দিকে। তাদের জুটি ভাঙার আগেই দক্ষিণ আফ্রিকা পৌঁছে যায় ৯১ রানে। ওপেনার ডি ককের বিদায়ে ভাঙে এ জুটি। এ জুটির সংগ্রহ ৮৭ রান।

শাদাব খানের বলে ইমাম উল হককে ক্যাচ দেওয়ার আগে ডি কক করেন ৪৭ রান। ৬০ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংসটি। তবে ব্যাট করতে নেমে ভালো করতে পারেননি মার্করাম। মাত্র ৭ রান করে শাদাব খানেব বলে বোল্ড হলে ১০৩ রানে দক্ষিণ আফ্রিকা হারায় ৩ উইকেট।

দলীয় ১৩৬ রানে দলটি হারায় অধিনায়ক ডু প্লেসিস এর গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। মোহাম্মদ আমিরের বলেই ফিরতে হয় এ অধিনায়ককে। তবে আউট হওয়ার আগে তিনি খেলেন গুরুত্বপূর্ণ ৬৩ রানের ইনিংস। ৭৯ রানের ৫ চারে সাজানো ছিল তার ইনিংটি। আমির আর শাদব খানের বোলিংয়ে ১৩৬ রানে প্রথম চার উইকেট হারিয়ে চাপেই পড়ে দলটি। তবে রাসি ভ্যান ডরি ডুসেন আর ডেভিড মিলার মিলে জুটি করে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন।

দলীয় ১৮৯ রানে হয় এ জুটির পতন। হাফিজের হাতে ডুসেনকে ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেন শাদাব খানই। আউট হওয়ার আগে ডুসেন ৪৭ বলে এক চার আর এক ছক্কায় করেন ৩৬ রান। ডুসেনের বিদায়ে বেশি সময় টিকতে পারেননি মিলারও। দলীয় ১৯২ রানে শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে তিনি করেন ৩৭ বলে ৩১ রান।

দলীয় দুইশত রানের কোটা পার করার আগেই ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট করতে নেমে ক্রিস মরিস, রাবাদা আর এনগিদি ভালো করতে পারেননি। এ তিন জনকেই ফিরতে হয়েছে ওয়াহাব রিয়াজের বলে। মরিস ১৬ রান, রাবাদা ৩ রান আর এনগিডি আউট হন ১ রান করে। ফলে ৯ উইেেকটে ২৫৯ রানেরই আটকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

পাকিস্তান জয় পায় ৪৯ রানে। ফেলুকুয়াও চেষ্টা করেও দলকে এগিয়ে নিতে পারেননি। তিনি ৩২ বলে ৬ চারে ৪৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। পাকিস্তানের পক্ষে শাদাব খান আর ওয়াহাব রিয়াজ নেন তিনটি করে উইকেট। মোহাম্মদ আমির নেন দুটি উইকেট।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান ৭ উইকেটে করেছে ৩০৮ রান। ফলে জিততে হলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে করতে হবে ৩০৯ রান। হারিস সোহেল আর বাবর আজমের অসাধারণ ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করেই স্কোরটা বড় করেল দলটি। লর্ডসে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের ভালো ভাবেই সামলেছেন দু-ওপেনার ইমাম উল হক-ফখর জামান জুটি।

দলের শতরানের আগে দুই ওপেনারকে হারালেও মোহাম্মদ হাফিজকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন বাবর আজম। দলীয় ১৪৩ রানে আইডেন মার্করামের বলে এলবি আউট হন হাফিজ। আউট হওয়ার আগে ৩৩ বলে এক ছক্কায় তিনি করেন ২০ রান। হাফিজের বিদায়ের পর বাবর আজমের সাথে ব্যাট করতে নেমে দলকে ঠিকই এগিয়ে নেন হারিস সোহেল। এ জুটিই পাকিস্তানকে বড় স্কোরের পথে নিয়ে যায়। জুটিতে ৮১ রান আসার পর দলীয় ২২৪ রানে ভাঙে জুটি।

বাবর আজমের বিদায়ে ব্যাট করতে নেমে ইমাদ ওয়াসিম শুরুটা করেছিলেন ঝড়ের বেগেই। কিন্তু টিকতে পারেন নি। মাত্র ১৫ বলে খেলে ৩ চারে ২৩ রান করার পর এনগিডির বলে আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন। ফলে তিন শত রানের আগেই পাকিস্তান হারায় ৫ উইকেট।

ওয়াহাব রিয়াজকে নিয়ে দলের স্কোরটা তিনশত রানের কোটায় নিয়ে যান হারিস সোহেল। দলীয় ৩০৪ রানে মাত্র ৪ রান করে এনগিডির বলে বোল্ড হন ওয়াহাব রিয়াদ। আর দলকে ৩০৭ রানে পৌছে আউট হন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করা হারিস সোহেল।

হারিস সোহেলকেও বিদায় করেন এনগিডি। তবে আউট হওয়ার আগে ৮৯ রানের এক অসাধারণ ইনিংস খেলেন হারিস। বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমে তিনি তুলে নেন প্রথম ফিফটি। মাত্র ১১ রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি তিনি। তার ব্যাটে ভর করে তিনশ পেরোনো সংগ্রহ পায় পাকিস্তান।

দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে এনগিডি তিনটি আর ইমরান তাহির নেন দুটি উইকেট। ম্যাচ সেরা হয়েছেন হারিস সোহেল।


শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

পাকিস্তান দলে কোন্দল নেই, ব্যর্থতার দায় সবার

পাকিস্তান দলে কোন্দল নেই, ব্যর্থতার দায় সবার

আমিরকে দুইবার সতর্ক করেছিলেন আম্পয়াররা

আমিরকে দুইবার সতর্ক করেছিলেন আম্পয়াররা

হাশিম আমলার আরেক রেকর্ড

হাশিম আমলার আরেক রেকর্ড

দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য এখন সম্মানজনক বিদায়

দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য এখন সম্মানজনক বিদায়