২০৫ রানেই অলআউট বাংলাদেশ

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ১১:৩১ এএম, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
২০৫ রানেই অলআউট বাংলাদেশ

প্রথম ইনিংসে আফগানিস্তানের করা ৩৪২ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২০৫ রানেই অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন শেষে ৮ উইকেটে ১৯৪ রান করা বাংলাদেশ তৃতীয় দিয়ে ১১ রান যোগ করতেই গুটিয়ে গেছে। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ১৩৭ রানের লিড পেয়েছে।

দ্বিতীয় দিন নিজের প্রথম ইনিংসে ১৩০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফলোঅনের শঙ্কায় পড়েছিল টাইগাররা। তবে সেটি অবশ্য হয়নি। দিন শেষে হাতে মাত্র ২ উইকেট নিয়ে ১৪৮ রান পিছিয়ে ছিল। ব্যাট হাতে মোসাদ্দেক হোসেন ৩৭ এবং তাইজুল ইসলাম ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন।

তৃতীয় দিন মাঠে কোন রান যোগ না করে আগের করা ১৪ রানেই বিদায় নেন তাইজুল ইসলাম। তাইজুলের বিদায়ের পর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামেন নাইম হাসান। তবে সেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১২ বলে ৭ রানেই কাটা পড়েন নাইম। ফলে অপরপ্রান্তে হাফসেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা মোসাদ্দেক সঙ্গী হরান। তিনি আজ মাত্র ৪ রান যোগ করতে পেরেছেন। ফলে ৮২ বলে ১ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় গড়া তার ৪৮ রানেই থেমে যেতে হয় তাকে।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ওপেনার রহমত শাহ’র ১০২ ও আসগর আফগানের অপরাজিত ৮৮ রানের সুবাদে প্রথম দিন শেষে ৫ উইকেটে ২৭১ রান করেছিল আফগানিস্তান। দ্বিতীয় দিন রশিদের নৈপূণ্যে ৩৪২ রানের ভালো সংগ্রহ পায় তারা। বাংলাদেশের পক্ষে তাইজুল ইসলাম ৪টি, সাকিব আল হাসান-নাইম হাসান ২টি করে এবং মেহেদী হাসান মিরাজ-মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১টি করে উইকেট নেন।

নিজেদের ইনিংসের শুরুতেই উইকেট হারায় স্বাগতিক বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ বলে উইকেট পতনের তালিকায় নাম লেখান ওপেনার সাদমান ইসলাম। ৪ বলে শূন্য রানে ফিরেন সাদমান ইসলাম।

সাদমানের আউটের পর ক্রিজে আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারের সঙ্গী হন লিটন দাস। পরবর্তীতে সর্তকতার সাথে খেলে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যান সৌম্য-লিটন। এ সময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪ ওভারে ১ উইকেটে ১ রান। সৌম্য শূন্য ও লিটন ১ রানে অপরাজিত ছিলেন।

মধ্যাহ্ন-বিরতি শেষে ব্যাট হাতে ভালোই খেলছিলেন সৌম্য-লিটন। রানের চাকা সচল করেছিলেন তারা। বড় হচ্ছিল বাংলাদেশের স্কোর। এমন সময় বাংলাদেশ শিবিরে আঘাত হানেন আফগানিস্তানের স্পিনার মোহাম্মদ নবী। ১৭ রান করা সৌম্যকে লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন।

সৌম্যর সঙ্গী লিটন নিজের ইনিংসটা বড় করছিলেন। কিন্তু লিটনকে বেশি দূর যেতে দিলেন না রশিদ খান। ৩৩ রানে থাকা লিটনের উইকেট উপড়ে ফেলেন রশিদ।

দলীয় ৫৪ রানে লিটনের বিদায়ের পর সাকিবকে নিয়ে দলের হাল ধরেন চার নম্বরে খেলতে নামা মোমিনুল হক। আফগানিস্তানের বোলারদের সামলে রয়েসয়ে এগোচ্ছিলেন তারা। এতে এ জুটিতে শতরানে পৌঁছানোর পথে হাটতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু আবারও বড় জুটি গড়ার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান আফগান অধিনায়ক রশিদ।

সাকিবকে শিকার করে মোমিনুলের সাথে ৩৪ রানের জুটি ভাঙেন রশিদ। ১১ রান করে লেগ বিফোর হন সাকিব। দলীয় ৮৮ রানে সাকিবের আউটের পর ১০৪ রানের মধ্যে আরও দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

দু’টিই ছিল অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মিডল-অর্ডারের প্রধান দুই ভরসা মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সাকিবের মত মুশফিক-মাহমুদউল্লাহকেও শিকার করেন রশিদ। মুশফিক রানের খাতা খুলতেই পারেননি। আর মাহমুদউল্লাহ করেন ৭ রান। তাই ১০৪ রানেই ষষ্ঠ উইকেট হারাতে হয় বাংলাদেশ। এ অবস্থায় পুরো ব্যাকফুটে চলে যায় টাইগাররা।

তারপরও আশার আলো জ্বলে ছিল মোমিনুল ক্রিজে থাকায়। কিন্তু হাফ-সেঞ্চুরির পর এলোমেলো হয়ে যায় মোমিনুল। নামের পাশে ৫২ রান রেখে নবীর বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলেন তিনি। তার ৭১ বলের ইনিংসে ৮টি চারের মার ছিল।

মোমিনুলের পর বিদায় নেন টেল-এন্ডার পজিশনে ভালো ব্যাট করতে পারা মিরাজ। তবে প্রয়োজনীয় সময় ১১ রানেই থেমে যান মিরাজ। ফলে ১৪৬ রানে অষ্টম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ইনিংস গুটিয়ে যাওয়া সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশের সামনে।

তবে ওপরের সারির ব্যাটসম্যানরা যা পারেননি, তা শেষ বিকেলে করে দেখান মোসাদ্দেক হোসেন ও তাইজুল ইসলাম। তবে তৃতীয় দিন তারাও পারলেন না। আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ ৫টি, নবী ৩টি উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান : ৩৪২/১০, ১১৭ ওভার (রহমত ১০২, আসগর ৯২, তাইজুল ৪/১১৬)
বাংলাদেশ : ২০৫/১০, ৭০.৫ ওভার (মোমিনুল ৫২, মোসাদ্দেক ৪৮*, রশিদ ৫/৪৭)।


শেয়ার করুন :