বৃষ্টি আইনে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সেমির দৌড়ে টিকে রইলো পাকিস্তান

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৮:১৩ পিএম, ০৪ নভেম্বর ২০২৩
বৃষ্টি আইনে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সেমির দৌড়ে টিকে রইলো পাকিস্তান

হারলেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ঘটতো পাকিস্তানের। এমন সমীকরণে নিউজিল্যান্ডের ছুঁড়ে দেওয়া পাহাড়সহ রানের লক্ষ্যে ব্যাট হাতে দারুণ জবাব দিচ্ছিল পাকিস্তান। মাঝপথে বৃষ্টির বাঁধা বন্ধ হয়ে যায় ম্যাচ। শেষ পর্যন্ত শঙ্কা উড়িয়ে বৃষ্টি আইনেই জয়ের হাসি হাসলো পাকিস্তান।

টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ৪০১ রানের বিশাল স্কোর গড়েছিল নিউজিল্যান্ড। ব্যাট হাতে অধিনায়ক কের উইলিয়ামসন ৯৫ এবং রাচিন রাবিন্দ্রা ১০৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।

জবাবে মাত্র ৬ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙলেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৯৬ রান তুলেন ফখর জামান এবং অধিনায়ক বাবর আজম। বৃষ্টির কারণে ২৫.৩ ওভারে পাকিস্তানের দলীয় ২০০ রানে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। ব্যাট হাতে জামান ১২৬ এবং বাবর ৬৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।

ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে বৃষ্টি আর না থামলে ২১ রানে জয় পেয়ে যায় পাকিস্তান। বৃষ্টির আইনে এ জয়ে সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে রইলো পাকিস্তান। ৮ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে বাবর আজমদের অবস্থান এখন ৫ নম্বরে। অন্যদিকে, সমান সংখ্যক ম্যাচ ও পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে থেকে ৪ নম্বরে রয়েছে নিউজিল্যান্ড।

বেঙ্গালুরুতে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে নিউজিল্যান্ড। এ ম্যাচ দিয়ে আঙুলের ইনজুরি থেকে সুস্থ হয়ে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামেন নিউজিল্যান্ডের নিয়মিত অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।

নিউজিল্যান্ডকে দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র ৬৫ বল খেলে ৬৮ রানের সূচনা এনে দেন। ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে কনওয়েকে থামিয়ে নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী ভেঙে ওয়ানডেতে ১শ উইকেট পূর্ণ করেন পাকিস্তানি পেসার হাসান আলি।

কনওয়ের বিদায়ে উইকেটে আসেন অধিনায়ক উইলিয়ামসন। রবীন্দ্রকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের রানের চাকা সচল রাখেন তিনি। ২০তম ওভারে ৫১ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রবীন্দ্র। বিশ্বের সপ্তম ও নিউজিল্যান্ডের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ পঞ্চমবারের মত অন্তত ৫০ রানের ইনিংস খেলে রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নিয়েছে রবীন্দ্র।

উইকেটের চারপাশে নান্দনিক সব শটে ৩৪তম ওভারে ওয়ানডেতে তৃতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৮৭ বল খেলা রবীন্দ্র। ক্যারিয়ারের সবগুলো সেঞ্চুরিই এবারের বিশ্বকাপে করেছেন তিনি। এর আগে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শতক করেছিলেন এ বাঁ-হাতি ব্যাটার।

বিশ্বকাপে তৃতীয় সেঞ্চুরিতে রেকর্ড বইয়ে নাম তুলেন রবীন্দ্র। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ তিন সেঞ্চুরির মালিক এখন তিনি।
এর ফলে ২৫ বছর বয়সের নিচে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরিতে ভারতের মাস্টার ব্লাস্টার শচীন টেন্ডুলকারকে টপকে রেকর্ড গড়েছেন রবীন্দ্র। ২২ বছর বয়সে বিশ্বকাপে ২টি সেঞ্চুরি করেছিলেন টেন্ডুলকার। ২৩ বয়স বয়সেই ৩টি সেঞ্চুরির মালিক হয়েছেন রবীন্দ্র।

রবীন্দ্রর সেঞ্চুরির পর উইলিয়ামসনের শতকের অপেক্ষায় ছিল নিউজিল্যান্ড। তবে হতাশ হতে হয়েছে তাকে। নব্বইয়ের ঘরে থাকতে ৩৫তম ওভারে স্পিনার ইফতিখার আহমেদকে ছক্কা মারতে গিয়ে লং-অফে ক্যাচ দিলে ১০টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭৯ বলে ৯৫ রানে উইলিয়ামসনের বিদায় ঘটে। তবে এ ইনিংস খেলার পথে বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক হন উইলিয়ামসন।

২৫ ম্যাচে উইলিয়ামসন করেছেন ১০৮৪ রান। ৩৩ ম্যাচে ১০৭৫ রান নিয়ে দ্বিতীয়স্থানে নেমে গেছেন সাবেক অধিনায়ক স্টিফেন ফ্লেমিং।
দ্বিতীয় উইকেটে রবীন্দ্র-উইলিয়ামসন ১৪২ বলে ১৮০ রান যোগ করেন। বিশ্বকাপে যেকোন উইকেটে নিউজিল্যান্ডের এটি দ্বিতীয় ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি।

উইলিয়ামসন ফেরার পরের ওভারে বিদায় নেন রবীন্দ্র। তবে ব্যাটাররা নির্ধারিত ৫০ ওভারে নিউজিল্যান্ডকে ৪০১ রানের বিশাল সংগ্রহ এনে দেন। বল হাতে পাকিস্তানের কক্ষে মোহাম্মদ ওয়াসিম ৩টি উইকেট শিকার করেন।

৪০২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিককে (৪) দলীয় ৬ রানেই হারায় তারা। এরপর অপর ওপেনার ফখর জামানের সাথে ব্যাট হাতে উইকেটে যুক্ত হন অধিনায়ক বাবর আজম।

দুজনে মিলে নিউজিল্যান্ড বোলারদের উপর রীতিমত তান্ডব চালায়। সেঞ্চুরি তুলে ৮১ বলে ১২৬ রানে অপরাজিত ছিলেন ফখর জামান। এছাড়া অন্যপ্রান্তে ৬৩ বলে ৬৬ রান করেন বাবর আজম।

ফখর জামানের ইনিংসে ৮টি চারের মার থাকলেও ছক্কা হাঁকান ১১টি। অন্যদিকে, ৬টি চারের সাথে ২টি ছক্কা মারেন বাবর। তাদের দুজনের ব্যাটিং তান্ডব চলাকালে ২৫.৩ ওভারের সময় বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। প্রতি ওভারে ৭.৮৪ রান রেটে এ সময় পাকিস্তানের দলীয় সংগ্রহ ছিল ২০০ রান।


শেয়ার করুন :