ঢাকা টেস্টে পাকিস্তানের কাছে ইনিংস ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৪:৫৭ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২১
ঢাকা টেস্টে পাকিস্তানের কাছে ইনিংস ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ

ঢাকায় টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ, চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্টে বড় ব্যবধানের হার; তবে সবকিছুকেই ছাপিয়ে গেল ঢাকা টেস্ট। বৃষ্টি বিঘ্নিত ঢাকা টেস্টে পাকিস্তানের ঘোষিত মাত্র ৩০০ রানেই ইনিংস ব্যবধানে হেরে লজ্জার ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে ৩০০ রানে ইনিংস ঘোষণা করা পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৮৭ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৫ করে বাংলাদেশ। ফলে ইনিংস এবং ৮ রানে হারের স্বাদ পায় বাংলাদেশ।

দিনের ৫ দশমিক ২ ওভার বাকি থাকতেই বাংলাদেশকে গুটিয়ে দিয়ে চট্টগ্রামের পর ঢাকা টেস্টেও জয়োল্লাসে মেতে ওঠে পাকিস্তান।

নিয়মনুযায়ী ঢাকা টেস্টে ৪৫০ ওভার খেলার কথা ছিল। তবে বৃষ্টির কারণে খেলা হয়েছে মাত্র ২১৫ দশমিক ১ ওভার। ম্যাচের অর্ধেকেরও কম খেলা হওয়ার পরও পাকিস্তানের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে বাংলাদেশি ব্যাটাররা।

৪ উইকেটে ৩০০ রান তুলে বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান। এরপর ব্যাট হাতে নেমে নিজেদের প্রথম ইনিংসে চতুর্থ দিন শেষে ৭ উইকেটে ৭৬ রান করে বাংলাদেশ। ফলোঅন এড়াতে তখনো ২৫ রানের প্রয়োজন ছিল। তবে বাকি ৩ উইকেটে ১১ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি বাংলাদেশ।

বুধবার ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিন শেষ পর্যন্ত ৮৭ রানে অলআউট হয়ে ফলোঅনে পড়ে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেটে যৌথভাবে এটি বাংলাদেশের দলীয় সর্বনিম্ন রান। ২৩ রান নিয়ে দিন শুরু করে শেষ ব্যাটার হিসেবে ব্যক্তিগত ৩৩ রানে আউট হন সাকিব আল হাসান।

অন্য দুই ব্যাটার তাইজুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ খালি হাতে ফিরেন। ফলে ৩২ ওভারে প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যায় টাইগাররা। অন্যদিকে, পাকিস্তানের অফ-স্পিনার সাজিদ খান ১৫ ওভারে ৪২ রানে ৮ উইকেট নেন।

ফলোঅনে পড়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেও ব্যর্থতার বৃত্তেই নিজেদের আটকে রাখেন বাংলাদেশের টপ-অর্ডার ব্যাটাররা। ২৫ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ২ ও অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা মাহমুদুল হাসান জয় ৬ রান করে ফিরেন।

তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত ৬ ও অধিনায়ক মমিনুল হক ৭ রান করে ফিরেন। বাংলাদেশের পতন হওয়া এই চারটি উইকেট ভাগাভাগি করে নেন পাকিস্তানের দুই পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হাসান আলি।

উপরের সারির ব্যাটারদের মতো যাওয়া-আসার মিছিলে যোগ দেননি বাংলাদেশের দুই মিডল-অর্ডার মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। পাকিস্তানের বোলারদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলে অবিচ্ছিন্ন থেকেই মধ্যাহ্ন-বিরতিতে গিয়েছিলেন মুশফিক-লিটন।

বিরতি থেকে ফিরেও উইকেটে দাপট দেখাচ্ছিলেন মুশফিক ও লিটন। কিন্তু ব্যক্তিগত ৪৫ রানে সাজিদের ঘূর্ণিতে হার মানেন লিটন। স্কয়ার লেগে ফাওয়াদকে ক্যাচ দেন প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করা লিটন। ৮১ বলে ৭টি চারে ৪৫ রান করেন তিনি। পঞ্চম উইকেটে ১৫০ বলে ৭৩ রান যোগ করেন তারা।

লিটনের বিদায়ের পর সাকিব আল হাসানকে নিয়ে পাকিস্তানের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মুশফিক। কিন্তু চা-বিরতি ঠিক আগ মুহূর্তে রান আউটের ফাঁদে পড়েন মুশি। ১৩৬ বলে ৩টি চারে ৪৮ রান করেন মুশফিক। ষষ্ঠ উইকেটে সাকিবের ৪৯ রানের জুটি গড়েন মুশফিক।

মুশফিক-লিটন, মুশফিক-সাকিবের জুটির কল্যাণে হার এড়ানোর পথ খুঁজে পেয়েছিল বাংলাদেশ। উইকেট টিকে থাকার মতো বড় জুটিই হার থেকে বাঁচাতে পারত বাংলাদেশ। মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে আরও একটি জুটি গড়েন সাকিব। উইকেট বাঁচানোই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল তাদের। সেই পথেই ছিলেন তারা।

৭৬তম ওভারে বল হাতে হঠাৎ আক্রমণে এসে মিরাজকে লেগ বিফোর আউট করেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর। এজন্য রিভিউ নিতে হয়েছে পাকিস্তানকে। ১টি চারে ৭০ বলে ১৪ রান করেন মিরাজ। সাকিবের সাথে ১৩৯ বলে ৫১ রান তুলেছিলেন মিরাজ। এ ম্যাচে প্রথমবারের মতো টেস্টে বল করতে এসেই উইকেট পান বাবর।

মিরাজ ফেরার ৯ বলের মাথায় প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন সাকিবও। সাজিদের বলে বোল্ড হন তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৬তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ১৩০ বলে ৬৩ রান করেন সাকিব। ইনিংসে ৯টি চার মারেন তিনি।

২শ রানে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে সাকিবের আউটের পর পাকিস্তানের জয় সময়ের ব্যাপার ছিল। তবে শেষ দিকের ব্যাটাররা লড়াই করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ৮৫তম ওভারে ২০৫ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

খালেদ আহমেদের পর তাইজুলকে শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট করে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন সাজিদ। এ ইনিংসে ৮৬ রানে ৪ উইকেট নেন সাজিদ। প্রথম ইনিংসে ৪২ রানে ৮টিসহ ১২ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হন সাজিদ। সিরিজ সেরা পাকিস্তানের আবিদ আলি।

এ সিরিজ জয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ৪ ম্যাচে ৩ জয় ও ১ হারে ৩৬ পয়েন্ট অর্জন করে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে ওঠে এলো পাকিস্তান। এ সিরিজ দিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পথচলা শুরু করা বাংলাদেশ শূন্য হাতে সিরিজ শেষ করলো।

স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস

[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]


শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

সবচেয়ে কম ম্যাচে ৪ হাজার রান ও ২শ’ উইকেটের মালিক সাকিব

সবচেয়ে কম ম্যাচে ৪ হাজার রান ও ২শ’ উইকেটের মালিক সাকিব

কেন এতো তাড়াহুড়ো, বুঝতেছি না : সুজন

কেন এতো তাড়াহুড়ো, বুঝতেছি না : সুজন

উইকেটে টিকে থাকতেই আক্রমণাত্মক খেলেছি : শান্ত

উইকেটে টিকে থাকতেই আক্রমণাত্মক খেলেছি : শান্ত

অভিষেকের ৪১৯ বলে খালেদের প্রথম উইকেট শিকার

অভিষেকের ৪১৯ বলে খালেদের প্রথম উইকেট শিকার