সুপার ফোর: স্বাগতিক পাকিস্তানের মুখোমুখি বাংলাদেশ

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৯:১৭ এএম, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
সুপার ফোর: স্বাগতিক পাকিস্তানের মুখোমুখি বাংলাদেশ

এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ হয়েছে, এখন লড়াই সুপার ফোরের। রোমাঞ্চকরভাবে ঘুড়ে দাঁড়িয়ে সুপার ফোর নিশ্চিত করা বাংলাদেশের ম্যাচ দিয়েই শুরু হচ্ছে এ লড়াই। বাংলাদেশ সময় আজ (বুধবার) বিকেল সাড়ে তিনটায় লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে স্বাগতিক পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে টাইগাররা।

২০১৯ সালের বিশ্বকাপের পর এবারই প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান। সর্বশেষ লড়াইয়ে টাইগারদের ৯৪ রানে হারিয়েছিল পাকিস্তান। বিশ্বকাপের ওই ম্যাচের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা চারটি ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে ২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে হওয়া এশিয়া কাপের সুপার পর্বের জয়টিও ছিল।

এশিয়া কাপের মঞ্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সেটিই একমাত্র সাফল্য। জয় পাওয়া ম্যাচে পাকিস্তানের পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে উইকেটরক্ষক সরফরাজকে ক্যাচ দিয়ে ৯৯ রানে আউট হন মুশফিকুর রহিম। আসরের ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ।
পরিসংখ্যান মতে ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৭ ম্যাচ খেলে ৫টিতে জয় ও ৩২টিতে হেরেছে বাংলাদেশ।

এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে হৃদয় ভঙ্গের কিছু অভিজ্ঞতাও আছে বাংলাদেশের। ২০১২ সালে ঘরের মাঠের এশিয়া কাপে প্রথমবারের মত ফাইনালে উঠেছিল টাইগাররা। আসরে পাকিস্তান ছাড়া অন্যসব দলকে হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে মাত্র ২ রানের হারে হৃদয় ভাঙে পুরো জাতির।

দুর্দান্ত পারফরমেন্সের সুবাদে ওয়ানডে ফরম্যাটে এখন শক্তিশালী দলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। তবে এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্বে ফেভারিট হিসেবেই শুরু করবে পাকিস্তান। কারণ ঘরের মাঠের সুবিধার পাশাপাশি দুর্দান্ত বোলিং আক্রমণ রয়েছে তাদের। শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ এবং হারিস রউফকে নিয়ে বিশ্বের অন্যতম ভয়ঙ্কর পেস আক্রমণ রয়েছে পাকিস্তানের।

এদিকে, খাদের কিনারায় পৌঁছে যাওয়ার পরও টুর্নামেন্টে টিকে থাকার দৃঢ় মানসিকতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। বাজে ব্যাটিং পারফরমেন্সের কারনে শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে হেরে আসর শুরু করায় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের অনেকেই এশিয়া কাপে বাংলাদেশের শেষ দেখেছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে দারুনভাবে ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। ফিরে আসাটা এতটাই চমৎকার যে,রান রেটের সমীকরণের মারপ্যাচে পড়তে হয়নি টাইগারদের।

সমালোচকদের কল্পনার বাইরে গিয়ে পরিকল্পনা ও হিসেবি ক্রিকেট খেলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ দল বেশ ভার করেই জানতো আফগানিস্তানের কঠিন বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে কত বড় স্কোর করতে হবে। ম্যাচে নিজের কৌশল ফুটিয়ে তুলেছেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। লাহোরের উইকেটে রশিদ খান বাংলাদেশকে সমস্যায় ফেলতে পারেন বুঝতে পেরে ব্যাটিং লাইনআপে পরিবর্তন করেছিলেন তিনি।

আফগানিস্তানে বিপক্ষে জয়ে কৌশলগত ভূমিকা অবশ্যই গুরুত্বপুর্ন ছিল। কিন্তু লাহোরের ভেন্যুতে বলতে গেলে অপরাজেয় এক দল পাকিস্তানের বিপক্ষে শুধুমাত্র কৌশল দিয়েই জয় পাওয়া সম্ভব হবে না।

অনুপ্রেরনাদায়ক অধিনায়ক বাবর আজমের নেতৃত্বে ফর্মের তুঙ্গে আছে পাকিস্তানের বোলার ও ব্যাটাররা। কৌশলগত পরিকল্পনার পাশাপাশি পাকিস্তানের বিপক্ষে জিততে হলে নিজেদের দক্ষতাও দেখাতে হবে বাংলাদেশকে। নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারলে বাংলাদেশের সাফল্য পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন মেহেদি হাসান মিরাজ।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ী ১১২ রানের ইনিংস খেলার পর মিরাজ বলেছেন, “আমরা কোন প্রতিপক্ষকে নিয়ে চিন্তিত নই। আমরা শুধু আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে চাই। আমরা জানি, আমরা যদি সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি, আমরা যে কোন দলকে যে কোন কন্ডিশনে হারাতে পারি।”

তিনি আরও বলেন, “শক্তিশালী ব্যাটিং এবং বোলিং আক্রমণ আছে পাকিস্তানের। কিন্তু আমাদের যা দক্ষতা আছে, তা দিয়ে তাদের মোকাবেলা করার বিষয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী।”

জ্বর থেকে পুরোপুরি সেরে উঠায় দলে সাথে যোগ দিয়েছেন ওপেনার লিটন দাস। তবে ইনজুরির কারণে ফর্মে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গেছেন, যা বাংলাদেশ দলের জন্য একটি বড় ধাক্কা।

বাংলাদেশ দল
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ, মাহেদি হাসান, নাইম শেখ, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, তানজিদ হাসান তামিম, তানজিম হাসান সাকিব ও এনামুল হক বিজয়।

পাকিস্তান দল
বাবর আজম (অধিনায়ক), শাদাব খান, মোহাম্মদ রিজওয়ান, সাউদ শাকিল, ফখর জামান, আবদুল্লাহ শফিক, ইমাম-উল-হাক, সৌদ শাকিল, সালমান আলি আঘা, ইফতিখার আহমেদ, মোহাম্মদ নাওয়াজ, উসামা মীর, হারিস রউফ, নাসিম শাহ, শাহিন শাহ আফ্রিদি, মোহাম্মদ হারিস, ফাহিম আশরাফ ও মোহাম্মদ ওয়াসিম।



শেয়ার করুন :