রাজশাহীর চোখ হ্যাটট্টিক জয়ে, খুলনার দ্বিতীয়

দুই দিন বিরতি দিয়ে আজ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) থেকে আবারও শুরু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু বিপিএল। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে দুপুর দেড়টায় খুলনা টাইগার্সের মুখোমুখি হবে রাজশাহী রয়্যালস।

ঢাকা পর্বে দুই ম্যাচ খেলে দু’টিতেই জিতেছে রাজশাহী রয়্যালস। শুধু তাই নয়, রান রেটে এগিয়ে থেকে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষেও রয়েছে রাজশাহী। এবার চট্টগ্রামের মাটিতে বঙ্গব্ন্ধু বিপিএল হ্যাটট্টিক জয়ের স্বাদ নিতে চায় তারা।

অপরদিকে ঢাকায় মাত্র ১টি ম্যাচ খেলেছে খুলনা। জিতেছেও সেটিতে। সেই ধারা অব্যাহত রেখে চট্টগ্রামের মাটিতে নিজেদের দ্বিতীয় জয়ের স্বাদ নিতে চায় খুলনা টাইগার্স।

এবারের বিশেষ বিপিএলের দ্বিতীয় দিনই মাঠে নামে রাজশাহী। ওই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল মাশরাফি-তামিমের ঢাকা প্লাটুন। বোলারদের দুর্দান্ত নৈপূন্যে ঢাকাকে ১৩৪ রানের বেশি করতে দেয়নি রাজশাহী। এরপর ব্যাটসম্যানদের নৈপূন্যে সহজ জয়ের স্বাদ পায় রাজশাহী।

দ্বিতীয় ম্যাচে রাজশাহীর প্রতিপক্ষ ছিল সিলেট থান্ডার। প্রতিপক্ষকে ৯১ রানে অলআউট করে দেয় রাজশাহী। ৯২ রানের স্পর্শ করতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি তাদের। ৫৫ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রাজশাহী। তাই শতভাগ সাফল্য নিয়েই চট্টগ্রাম পর্ব শুরু করছে রাজশাহী। চট্টগ্রাম পর্বে মোট তিনটি ম্যাচ খেলবে রাজশাহী রয়্যালস।

খুলনার বিপক্ষে জয় দিয়ে চট্টগ্রাম পর্ব শুরু করার লক্ষ্য রাজশাহীর। দলের ওপেনার লিটন দাস তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। বলেন, ‘ঢাকায় যা হয়েছে, ওখান থেকে আমাদের এখন পাওয়ার কিছু নেই। আমরা দু’টা ম্যাচ জিতেছি সেখানে, এটাই। এখন যা করণীয়, সেটা করতে হবে।’

খুলনাকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ উল্লেখ লিটন বলেন, ‘প্রতিপক্ষ অনেক শক্তিশালী আমার কাছে মনে হয়। তারা অনেক ভারসাম্যপূর্ণ দল। যেখানে রিলি রুশো, মুশফিক ভাই, এরপর ফ্রাইলিঙ্ক, আরও স্থানীয় কয়েকজন ভালো খেলোয়াড় আছে। আমার মনে হয় ম্যাচটি প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ ভালোই হবে।’

প্রথম দু’ম্যাচে রাজশাহীর জয়ের পেছনে প্রধান কারিগর ছিলেন দলের টপ-অর্ডাররা। তাই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কোন পরীক্ষায় পড়তে হয়নি। তবে এটিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন লিটন। বলেন, ‘এটা তো অনেক ভালো ব্যাপার। আমরা টপ অর্ডাররা নিয়মিত রান পাচ্ছি। দোয়া করবেন সামনের ম্যাচগুলোয় যেন এমনই হয় যে, আমরা টপ অর্ডারই ম্যাচ শেষ করতে পারি। নিচের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং না করতে হয়।’

দলের প্রয়োজন মেটাতে পেরে খুশি লিটন। বলেন, ‘বড় ইনিংসের টার্গেট তো সব সময়ই সেট করা থাকে। টি-২০ খেলাটা এমন, শুরুতে ব্যাটিং করলে ম্যাচের এক অবস্থা থাকে, টার্গেট বড় হলে অবস্থা এক রকম থাকে। টার্গেট ছোট হলে সিচুয়েশন আরেক রকম থাকে। যদি সুযোগ হয় এ রকম বড় ইনিংস খেলার। আমি চাচ্ছি না যে একশই মারতে হবে। দলের জন্য যেটুকু করার সেটা করতে পারলেই আমি খুশি।’

অন্যদিকে ঢাকা পর্বে একটি ম্যাচ খেলেছে খুলনা টাইগার্স। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৮ উইকেটে হারায় তারা। ফলে চট্টগ্রামের মাটিতে দ্বিতীয় জয়ে চোখ খুলনার। দলের ওপেনার শাসমুর রহমান বলেন, ‘নিঃসন্দেহে রাজশাহী খুব ভালো ছন্দে আছে। সব বিভাগেই তারা ভালো করছে, ম্যাচ জেতার সক্ষমতা তাদের আছে। পাশাপাশি আমরাও ভালো একটা পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামব। তবে যেটা হচ্ছে ক্রিকেট খেলা যে কোন কিছুই হতে পারে। যার যেদিন বেস্ট শট লাগবে সেদিন সবকিছুই পরিবর্তন করার সুযোগ অনেক বেশি। দল হিসেবে আমরাও ভালো দল। চেষ্টা থাকবে প্রথম ম্যাচে যেমন গাণিতিক ক্রিকেট খেলেছি সেই পরিকল্পনাই নিয়েই মাঠে নামব।’

দলের জন্য যতটুকু প্রয়োজন সেটুকু করতে পারলেই খুশি হন শামসুর। বলেন, ‘আমি যে দলে খেলি সে দলে চাহিদা থাকে আমার রানটা যেন দলে সাহায্য করে। আমিও সেই দিকেই নজর রাখি, সেভাবেই খেলার চেষ্টা করি। আমরা যে দায়িত্ব বা রোল তাতে আমি সবসময় খুব বেশি বল হয়তো পাব না। ওপেনার বা ওয়ান ডাউনে যারা খেলে তাদের পঞ্চাশ বা একশ মারার একটা সুযোগ থাকে। আমি যে সময় নামব ওই সময় আমার এতো বড় স্কোর করার সুযোগ থাকবে না। তবে আমি যেটা বললাম আমি যে পাঁচ, ছয় বা ১০ বল খেলব তাতে যেন ১০/১৫ বা ২৫ রান আসে আমার চিন্ত ভাবনা সেভাবেই করছি।’

খুলনা টাইগার্স দল
মুশফিকুর রহিম, শফিউল ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, শামসুর রহমান, সাইফ হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, শহিদুল ইসলাম, আলিস আল ইসলাম, তানভির ইসলাম, রিলি রৌসু, রবি ফ্রাইলিঙ্ক, মোহাম্মদ আমির, নাজিবুল্লাহ জাদরান, রহমানউল্লাহ গুরবাজ।

রাজশাহী রয়্যালস দল
লিটন দাস, আফিফ হোসেন, আন্দ্রে রাসেল, আবু জায়েদ চৌধুরী, ফরহাদ রেজা, তাইজুল ইসলাম, অলক কাপালী, কামরুল ইসলাম রাব্বি, ইরফান শুক্কুর, মিনহাজুল আবেদীন আফ্রিদি, নাহিদুল ইসলাম, রবি বোপারা, হজরতউল্লাহ জাজাই, মোহাম্মদ নওয়াজ, মোহাম্মদ ইরফান।