জয়রথেই ছুটছে চট্টগ্রাম

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৮:৩৪ এএম, ২১ ডিসেম্বর ২০১৯
জয়রথেই ছুটছে চট্টগ্রাম

ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাঁদউইক ওয়ালটন ও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর বাঁ-হাতি পেসার মেহেদী হাসান রানার আগুন ছড়ানো বোলিংয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে জয়রথ ছুটছেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। শুক্রবার দিনের দ্বিতীয় ও টুর্নামেন্টের ১৪তম ম্যাচে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে ১৬ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম।

প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৩৮ রানের পাহাড় গড়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ওয়ালটন ২৭ বলে অপরাজিত ৭১ ও ইমরুল ৬২ রান করেন। জবাবে ইংল্যান্ডের ডেভিড মালানের ৩৮ বলে ৮৪ রানের সুবাদে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ২২২ রান করে কুমিল্লা। এ জয়ে ৬ ম্যাচে ৫ জয় ও ১ হারে ১০ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে টেবিলের শীর্ষে চট্টগ্রাম।

দ্বিতীয় ম্যাচের হারের পর টানা চার ম্যাচ জিতলো চট্টগ্রাম। অন্যদিকে ৪ ম্যাচে ২টি করে জয়-হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থস্থানে থাকলো কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ২১ রানে প্রথম উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারকুটে ওপেনার লেন্ডন সিমন্স ৭ বলে ২টি চারে ১০ রান করে আফগানিস্তানের মুজিব উর রহমানের বলে কাটা পড়েন।
এরপর আরেক ওপেনার শ্রীলঙ্কার আবিস্কা ফার্নান্দোকে নিয়ে মাত্র ৪৯ বলে ৮৫ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক ইমরুল।

৮৫ রানের মধ্যে ২০ বলে ৩৮ রান ছিল ফার্নান্দোর। আর ইমরুলের ছিল ২৯ বলে ৪৪ রান। বিধ্বংসী রূপে থাকা ফার্নান্দো-ইমরুলের জুটি ভাঙেন কুমিল্লার সৌম্য সরকার। ৩টি করে চার-ছক্কায় ২৭ বলে ৪৮ রান করে সৌম্যর বলে আউট হন ফার্নান্দো।

ফার্নান্দো ব্যর্থ হলেও হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন ইমরুল। ৩৪তম বলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে ৬২ রানে আউট হন ইমরুল। ৪১ বলের ইনিংসে ৯টি চার ও ১টি ছক্কা হাকিয়ে শানাকার শিকার হন তিনি। ইমরুলের বিদায়ে উইকেটে গিয়ে নিজের ব্যর্থতা অব্যাহত রাখেন নাসির। ৩ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।

ইনিংসের ৩৪ বল বাকি থাকতে দলীয় ১৩৯ রানে নাসিরের বিদায় ঘটে। এরপর জুটি বাঁধেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওয়ালটন ও উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান। শেষ ৩৪ বলে অবিচ্ছিন্ন ৯৯ রান যোগ করেন তারা। জুটিতে ওয়ালটন ১৯ বলে ৬০ ও নুরুল ১৫ বলে ২৯ রান করেন। ১৬ থেকে ২০ ওভার পর্যন্ত ওয়ালটন-নুরুলের রান ছিল যথাক্রমে ১০, ১০, ১৮, ২৯ ও ২৫। ফলে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৩৮ রানের পাহাড় গড়ে চট্টগ্রাম।

তবে বড় স্কোর গড়েও আক্ষেপ থেকে যায় চট্টগ্রামের। কারণ, মাত্র ২ রানের জন্য বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড গড়তে পারেনি তারা। বিপিএলের ইতিহাসে গত আসরে ৪ উইকেটে ২৩৯ রানের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল রংপুর রাইডার্স।

২৭ বলে ৫টি চার ও ৬টি ছক্কায় ওয়ালটন অপরাজিত ৭১ রান করেন এবং ১৫ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় অপরাজিত ২৯ রান করেন নুরুল। কুমিল্লার সৌম্য ৪৪ রানে ২টি উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ২৩৯ রানের পাহাড় সমান টার্গেট পায় কুমিল্লা। যা করতে পারলে ম্যাচ জয় তো বটেই পাশাপাশি বিপিএলে দু’টি রেকর্ড গড়তে পারবে কুমিল্লা। প্রথমটি বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রান স্পর্শ করা ও অন্যটি সর্বোচ্চ রান চেজ করে জয়ের রেকর্ড। তবে এমন কাজ যে দুরহ, তা বেশ ভালোই জানতো কুমিল্লা। আর মাঠে নেমে কুমিল্লাকে সেটি হাড়ে-হাড়ে বুঝিয়ে দেন চট্টগ্রামের তরুণ বাঁ-হাতি পেসার মেহেদী হাসান রানা।

ইতোমধ্যে দু’ম্যাচে সেরা হওয়া রানা শুক্রবারও ৩২ রানের মধ্যে কুমিল্লার ৩ উইকেটের পতন ঘটান। শ্রীলঙ্কার ভানুকা রাজাপাকসে ৬, সৌম্য সরকার ১৫ ও সাব্বির রহমান ৫ রান করে রানার শিকার হন।

২৭ বলের মধ্যে কুমিল্লার ওপরের সারির ৩ উইকেট পতনের পরও ব্যাট হাতে মারমুখী হন ইংল্যান্ডের ডেভিড মালান। তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন ইয়াসির আলি। ধীরে ধীরে বড় হতে থাকা এ জুটিতে ভাঙন ধরিয়ে চট্টগ্রামকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার রুবেল হোসেন। ১৭ বলে ২১ রান ইয়াসিরকে থামান রুবেল।

ইয়াসির থামলেও ব্যাট হাতে চড়া মেজাজে ছিলেন মালান। ২৬ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করেন। হাফ-সেঞ্চুরির পর চার-ছক্কায় নিজের ইনিংসটি বড় করছিলেন মালান। তাতে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগে। তবে মালানের সেঞ্চুরির পথেও কাটা হয়ে দাড়ান রানা। ইনিংসের ১৫তম ওভারে নিজের দ্বিতীয় স্পেলে বল হাতে নিয়েই মালানকে শিকার করেন রানা। ৭টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৩৮ বলে ৮৪ রান করেন মালান।

মালানের মত ব্যাট হাতে ঝড় তোলার চেষ্টা করেন অধিনায়ক শানাকাও। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেননি রংপুর রেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৩১ বলে অপরাজিত ৭৫ রান করা শানাকা। ৩টি করে চার-ছক্কায় ২১ বলে ৩৭ রান করেন শানাকা। মালানের সাথে পঞ্চম উইকেটে মাত্র ২৬ বলে ৬২ রান যোগ করেছিলেন শানাকা।

শেষের দিকে পেসার আবু হায়দারের ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ২৮ রানে বড় ব্যবধানে হারের মুখ থেকে রক্ষা পায় কুমিল্লা। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ২২২ রান করতে সক্ষম হয় কুমিল্লা। চট্টগ্রামের রানা ৪ ওভারে ২৮ রানে ৪ উইকেট নেন। প্রথম ৩ ওভারে ১ মেডেন ৬ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন রানা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স : ২৩৮/৪, ২০ ওভার (ওয়ালটন ৭১*, ইমরুল ৬২, সৌম্য ২/৪৪)
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স : ২২২/৭, ২০ ওভার (মালান ৮৪, শানাকা ৩৭, রানা ৪/২৮)।

ফল : চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ১৬ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা : চাঁদউইক ওয়ালটন (কুমিল্লা)।


শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

বিপিএল ছেড়ে দেশে ফিরছেন তিন শ্রীলঙ্কান

বিপিএল ছেড়ে দেশে ফিরছেন তিন শ্রীলঙ্কান

খুলনার হ্যাটট্রিক জয়ে রংপুরের চতুর্থ হার

খুলনার হ্যাটট্রিক জয়ে রংপুরের চতুর্থ হার

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সে বিশ্বকাপ জয়ী প্লানকেট

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সে বিশ্বকাপ জয়ী প্লানকেট

বিপিএলের উইকেট বিশ্বমানের : মাশরাফি

বিপিএলের উইকেট বিশ্বমানের : মাশরাফি