জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে বাংলাদেশের স্বস্তির জয়

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০১:৫৮ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০
জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে বাংলাদেশের স্বস্তির জয়

মুশফিকুর রহিমের ডাবল সেঞ্চুরি ও অফ স্পিনার নাঈম হাসানের বোলিং নৈপুন্যে অবশেষে টেস্ট ক্রিকেটে জয়ের হাসি হাসলো বাংলাদেশ। ক্রিকেটের এই বড় ফরম্যাটে টানা ছয় ম্যাচ হারের পর জয়ের দেখা পেল টাইগাররা।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের একমাত্র টেস্টে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সফররত জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ১০৬ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। একমাত্র ইনিংসে মুুশফিক ব্যাট হাতে অপরাজিত ২০৩ রান করেন। আর বল হাতে ৯ উইকেট শিকার করেন নাঈম।

টেস্ট ক্রিকেটে ১১৯ ম্যাচে ১৪তম জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। আর দ্বিতীয়বারের মত টেস্টে ক্রিকেটে কোন দলকে ইনিংস ব্যবধানে হারালো বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের নভেম্বরে মিরপুুরের মাঠেই প্রথমবারের মত ইনিংস ব্যবধানে প্রতিপক্ষকে হারিয়েছিল টাইগাররা। সে সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ও ১৮৪ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের ২৬৫ রানের জবাবে রানের পাহাড় গড়ে বাংলাদেশ। মুশফিকুরের অনবদ্য ২০৩ রান ও অধিনায়ক মমিনুল হকের ১৩২ রানের কল্যাণে প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ৫৬০ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ২৯৫ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে থেকে নিজেদের ইনিংস শুরু করে তৃতীয় দিন (সোমবার) শেষে ২ উইকেটে ৯ রান করে জিম্বাবুয়ে। ইনিংস হার এড়াতে বাকি ৮ উইকেটে আরও ২৮৬ রান করতে হত সফরকারীদের। তবে চতুর্থ দিন (মঙ্গলবার) ১৮৯ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।

সকালে বেশ সতর্কতার সাথে দিনের খেলা শুরু করে কাসুুজা ও টেইলর। দিনের প্রথম চার ওভারই মেডেন দেন তারা। পঞ্চম ওভারে বাংলাদেশের পেসার আবু জায়েদকে বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খোলেন টেইলর। তবে ষষ্ঠ ওভারে কাসুজা-টেইলরের জুুটি ভেঙে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন বাঁ-স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ৩৪ বলে ১০ রান কাসুজাকে আউট করেন তিনি।

দলীয় ১৫ রানে কাসুুজাকে হারানোর পর দলের রানের চাকা সচল করার চেষ্টা করেন টেইলর ও অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। রান তোলার কাজটা ভালোভাবেই করছিলেন তারা। তবে জুুটিটি জমে যাওয়ার আগেই তাতে ভাঙন ধরান স্পিনার নাঈম। ১টি করে চার-ছক্কায় ৪৭ বলে ১৭ রান করা টেইললকে ফেরান তিনি। চতুর্থ উইকেট জুুটিতে ২৯ রান করেন টেইলর ও আরভিন।

টেইলরের সাথে বড় জুটি গড়তে না পারলেও সিকান্দার রাজাকে নিয়ে সেই আশা কিছুটা হলেও পূরণ করেন আরভিন। তবে মধ্যাহ্ন বিরতির আগে এ জুুটি ভেঙে ব্রেকথ্রু পায় বাংলাদেশ। অধিনায়কের মমিনুলের থ্রোতে রান আউট হন আরভিন। প্রথম ইনিংসে ১০৭ রান করা আরভিন এবার করেন ৪৩ রান। ৪৯ বল খেলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন আরভিন। এ জুুটি দলকে ৬০ রান দেন।

 

আরভিনকে হারানোর ক্ষত নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় জিম্বাবুয়ে। তবে বিরতির পর দলের আরেক ভরসা রাজাকেও হারায় জিম্বাবুয়ে। তাইজুলের বলে মুশফিককে ক্যাচ দেন রাজা। ৭১ বলে ৩টি চারে ১টি ছক্কায় ৩৭ রান করেন জিম্বাবুয়ে দলের অন্যতম ভরসার প্রতীক রাজা।
দলীয় ১২১ রানে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে রাজার আউটের পর জিম্বাবুয়ের হার সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু শেষ দিকে লড়াই করার চেষ্টা করেছেন তিমিসেন মারুমা ও উইকেটরক্ষক রেগিস চাকাবা। বাংলাদেশ বোলারদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন তারা। তাই দলের স্কোর দেড়শ পেরিয়ে যায় জিম্বাবুয়ের।

এরপর এ জুটিতে বিচ্ছিন্ন করতে পারে বাংলাদেশ। তবে এতে পুরো কৃতিত্ব ফিল্ডার তামিম ইকবালের। তাইজুুলের বলে মিড-অনের উপর দিয়ে চার মারতে শট নিয়েছিলেন চাকাবা। সেটি শুন্যে লাফিয়ে তালুবন্দি করেন তামিম। আর সেখানেই শেষ হয় চাকাবা ও মারুমার লড়াই। চাকাবা ৪০ বলে ১৮ রান করেন। জুুটিতে রান ছিল ৪৪।

চাকাবার বিদায়ের পর জিম্বাবুয়ের লেজ কাটার দায়িত্ব নেন নাঈম। এনডলোভর পর মারুমাকে শিকার করে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেন নাঈম। ৫ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার পাঁঁচ বা ততোধিক উইকেট নিলেন নাঈম। ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে ইনিংসে ৬১ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।

নাঈমের পঞ্চম উইকেটের পর জিম্বাবুয়ের শেষ ব্যাটসম্যানকে প্যাভিয়িনে ফেরত পাঠান তাইজুল। তখন জিম্বাবুুয়ের রান ১৮৯। টিসুমাকে ৩ রানে আউট করেন তাইজুুল।

বাংলাদেশের নাঈম ৮২ রানে ৫টি ও তাইজুল ৭৮ রানে ৪টি উইকেট নেন। প্রথম ইনিংসে ৭০ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন নাঈম। তবে প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ২০৩ রানের জন্য ম্যাচ সেরা হয়েছেন বাংলাদেশের মুুশফিকুর রহিম।

ফল : বাংলাদেশ ইনিংস ও ১০৬ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা : মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)।



শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

মুশফিক-তামিমের মধ্যে চলে ইতিবাচক প্রতিদ্বন্দ্বিতা

মুশফিক-তামিমের মধ্যে চলে ইতিবাচক প্রতিদ্বন্দ্বিতা

জিম্বাবুয়ের বোলিং চ্যালেঞ্জিং ছিল না : মুশফিক

জিম্বাবুয়ের বোলিং চ্যালেঞ্জিং ছিল না : মুশফিক

মুশফিকের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি

মুশফিকের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি

সেঞ্চুরি হাঁকালেন অধিনায়ক মমিনুল হক

সেঞ্চুরি হাঁকালেন অধিনায়ক মমিনুল হক