পাকিস্তান সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেললেও টেস্ট খেলবে না বাংলাদেশ - এ সিদ্ধান্তে অড়ন ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে আইসিসি সফরে বাংলাদেশ পাকিস্তানে টেস্ট সিরিজ খেলতে রাজি হয়েছে। শুধু টেস্ট নয়, বাড়তি একটি ওয়ানডে ম্যাচও খেলবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
এদিকে রোববার (১৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অনুশীলন ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে পাকিস্তান সফরে রাজি হওয়ার মূল্য তথ্য জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি জানান, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপের অংশ হওয়ায় পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট খেলতে আইসিসির পক্ষ থেকে চাপ ছিল। আর পাকিস্তান সফরে যাওয়ার এটিই প্রধান কারণ।
পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশ দলের আসন্ন দুই ম্যাচ সিরিজ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের অংশ। পাপন জানান, ‘যদি এটি শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হতো তাহলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতো। কিন্তু দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপের অংশ, যা আয়োজন করছে আইসিসি। এটি বিশ্বকাপের মতো।’
তিনি বলেন, ‘চ্যাম্পিয়নশীপের ম্যাচ হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে হচ্ছে। তাই এটি এড়ানোর কোন বিকল্প নেই। আমি মনে করি, আইসিসির পূর্ণ সদস্য হিসেবে আমাদের এখানে অংশ নেওয়া উচিত এবং আইসিসিও তাই চায়। আসলে এটিই ছিল মূল চাপ।’
তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেললেই পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিষয়ে অবগত হওয়া যাবে উল্লেখ করেছিলেন বিসিবি বস। সংক্ষিপ্ত ভার্সনের সিরিজ খেলতে খেলতে ২২ জানুয়ারি দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ। প্রথম দফায় লাহোরে ২৪, ২৫ ও ২৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ।
পাপন বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেই আমরা সেখানকার পরিস্থিতি সর্ম্পকে ধারণা পাব। সফর চলাকালীন যদি কোন সমস্যা দেখা দেয়, তবে আমরা তখন সেটি নিয়ে আলোচনা করতে পারি এবং পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে।’
টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর আরও দু’বার পাকিস্তান সফরে যাবে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দফায় একটি টেস্ট এবং তৃতীয় ও শেষ দফায় ১টি ওয়ানডে ও দ্বিতীয়-শেষ টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
সেখানকার পরিস্থিতি খারাপ হলে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হবে জানিয়ে পাপন বলেন, ‘আইসিসি তাদের দল পাঠিয়েছে এবং ইতোমধ্যে সেখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। এরই মধ্যে, আন্তর্জাতিক দল সেখানে যেতে শুরু করেছে। এমনকি সেখানে শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজও খেলেছে। তাদের দল পাঠিয়েছে এবং এসব কারণ বিবেচনা করে এ সফরকে না বলা কঠিন ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘এতো কিছুর পরও যদি কোন খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তাহলে আমরা সেখানে যাব না। আমরা যদি মনে করি, পরিস্থিতি আমরা যা ভেবেছিলাম তার চেয়ে আলাদা, তবে দ্রুতই এই সফর বাতিল করব।’
পাপন বলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয়টি বাদ দিয়ে আমি ক্রিকেটারদের খেলায় মনোযোগী হতে বলেছি। নিরাপত্তার বিষয়টি যদি তাদের মনের মধ্যে থাকে, তবে তারা খেলায় মনোনিবেশ করতে পারবে না। বিসিবি নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে।’
মানসিক শান্তি ছাড়া ক্রিকেট খেলা কঠিন এবং এ জন্য আমরা আগেভাগেই নিরাপত্তা দল সেখানে পাঠিয়েছি। সেখানকার পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে এনএসআই, ডিজিএফআইয়ের কর্মীরা সেখানে উপস্থিত থাকবেন। আমাদের দিক দিয়ে, আমরা পুরো প্রস্তুতি নিয়েছি। এখন আমরা চাই, খেলোয়াড়রা নিশ্চিন্ত মনে সেখানে ক্রিকেট খেলুক।’
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিজেও পাকিস্তানে উপস্থিত থাকবেন বলে জানান। জানান, খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে চাঙ্গা করতে পাকিস্তানে নিজেই উপস্থিত থাকবেন তিনি। এছাড়া প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান ও দলের অপারেশন ম্যানেজার পাকিস্তানে হিসেবে থাকবেন সাব্বির খান।