ঢাকা-চট্টগ্রামের দুর্দান্ত লড়াই দেখলো বন্দর নগরী

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ১০:৪৬ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯
ঢাকা-চট্টগ্রামের দুর্দান্ত লড়াই দেখলো বন্দর নগরী

বঙ্গবন্ধু বিপিএলে দুর্দান্ত এক ম্যাচের সাক্ষী হলো বন্দর নগরী চট্টগ্রামবাসী। নিজেদের মাঠে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স চলমান বঙ্গবন্ধু বিপিএলের সর্বোচ্চ দলীয় ২২১ রান করার পরও ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে মাত্র ১৬ রানের জয় পেয়েছে।

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেন্ডন সিমন্সের ঝড়ো দু’টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে নির্ধারিত ওভারে ৪ উইকেটে ২২১ রানের পাহাড় গড়ে স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। রানের পাহাড় গড়েও অস্বস্তিতে পড়ে চট্টগ্রাম। ২২১ রানের টার্গেটে দুর্দান্ত জবাব দিয়ে ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল ঢাকা। তবে শেষ পর্যন্ত অবিস্মরণীয় জয়ের স্বাদ নিতে পারেনি মাশরাফির ঢাকা।

টার্গেটের খুব কাছে গিয়ে ২০ ওভারে ২০৫ রানে অলআউট হয়েছে ঢাকা প্লাটুন। ফলে ১৬ রানে ম্যাচ জিতে নেয় স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এবারের আসরে চট্টগ্রামের এটি টানা তৃতীয় জয়। ৫ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে চট্টগ্রাম। অন্যদিকে ৪ ম্যাচের ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চমে ঢাকা।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নেন ঢাকার অধিনায়ক মাশরাফি। প্রথম ওভারে বল হাতে আক্রমণে আসেন মাশরাফি। ওই ওভার থেকে ১২ রান তুলে নেন চট্টগ্রামের দুই বিদেশি ওপেনার ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেন্ডন সিমন্স ও শ্রীলঙ্কার আবিস্কা ফার্নান্দো। মাশরাফির দ্বিতীয় ওভার থেকে ১৫ রান তুলে নেন সিমন্স।

মাশরাফির সাথে বোলিং উদ্বোধন করা সালাউদ্দিন শাকিলকেও ছাড় দেয়নি চট্টগ্রামের দুই ওপেনার। প্রথম ২ ওভারে মাশরাফি ২৭ ও শাকিল ১৮ রান দেন। ফলে চার ওভার শেষে ৪৫ রান উঠে চট্টগ্রামের স্কোর বোর্ডে।

পঞ্চম ওভারে বোলিং আক্রমণে পরিবর্তন আনেন মাশরাফি। ডান-হাতি পেসার হাসান মাহমুদ আক্রমণে এসেই ফার্নান্দোকে শিকার করেন। ১৩ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৬ রান করেন ফার্নান্দো।

ফার্নান্দো ফিরলেও সিমন্সের মারমুখী মেজাজ অব্যাহত থাকে। সপ্তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি মেরে ২৪তম বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সিমন্স। তবে অর্ধশতক করে ৩৬ বলে ৫৭ রানে আজও রান আউট হন। ইনিংসে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কা মারেন সিমন্স।

সিমন্সের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের পথ অনুসরণ করেন ইমরুল কায়েস ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তৃতীয় উইকেটে তারা ২৭ বলে ৬২ রান যোগ করেন। ২৪ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ রান করে ইমরুল আউট হলেও ২৪ বলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন মাহমুদউল্লাহ। হাসানের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ২৮ বলে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫৯ রান করেন তিনি।

দলীয় ১৯১ রানে মাহমুদউল্লাহ আউট হলেও দলের স্কোর ২শ’ অতিক্রম করান ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাঁদউইক ওয়ালটন।শেষ দিকে ১৮ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ২৭ রান করেন তিনি। ঢাকার হাসান ৫৫ রানে ২ উইকেট নেন।

২২২ রানের টার্গেট স্পর্শ করতে বিপিএলে রেকর্ড গড়তে হত ঢাকাকে। বড় টার্গেট স্পর্শ করতে দ্বিতীয় ওভারেই ১ রান করা এনামুল হককে হারায় ঢাকা। এরপর ঢাকার মিডল-অর্ডারে জাকের আলী ২৭, ইংল্যান্ডের লরি ইভান্স ১৭ ও পাকিস্তানের আসিফ আলি ১৫ রানে সাজঘরে ফেরেন। তবে অন্যপ্রান্ত আগলে খেলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা মমিনুুল হক।

ওপেনার তামিমের পরিবর্তে খেলতে নেমে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৫ বলে ৫২ রান করেন মমিনুল। ব্যাট হাতে ব্যর্থতা অব্যাহত রেখেছেন পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি (৯)। আফ্রিদির বিদায়ে উইকেটে যান অধিনায়ক মাশরাফি। ততক্ষণে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ঢাকা। তখন ৩৩ বলে ৭৬ রান দরকার পড়ে ঢাকার। হাতে ছিল ৪ উইকেট।

স্ট্রাইকে গিয়ে ১৬তম ওভারের প্রথম তিন বলে চট্টগ্রামের স্পিনার নাসিরকে পরপর ছক্কা মারেন মাশরাফি। চতুর্থ বলে বাউন্ডারি তুলে নেন। এতে জয়ের সমীকরণ অনেকাংশেই কমে আসে ঢাকার। তবে পঞ্চম বলে আবারও ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন মাশরাফি। ৩৮৩ স্ট্রাইক রেট নিয়ে ৬ বলে ২৩ রানে থামেন মাশরাফি।

মাশরাফির আউটের পর ঢাকার জয়ের আশা জাগিয়ে রেখেছিলেন শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা। চার-ছক্কায় শেষ ৬ বলে জয়ের ব্যবধান ২১ রানে নামিয়ে আনেন পেরেরা। কিন্তু চট্টগ্রামের পেসার মেহেদী হাসান রানার শেষ ওভার থেকে মাত্র ৪ রান নিতে পারেন পেরেরা। ফলে ঢাকাকে ম্যাচটি হারতে হয়।

শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ২৭ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪৭ রান করেন পেরেরা। চট্টগ্রামের রানা ও মুক্তার ৩টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন চট্টগ্রামের পেসার মেহেদী হাসান রানা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স : ২২১/৪, ২০ ওভার (মাহমুদউল্লাহ ৫৯, সিমন্স ৫৭, হাসান ২/৫৫)
ঢাকা প্লাটুন : ২০৫/১০, ২০ ওভার (মমিনুল ৫২, পেরেরা ৪৭, রানা ৩/২৩)।
ফল : চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ১৬ রানে জয়ী।


শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

দুর্দান্ত মুশফিক, প্রশংসায় ভাসালেন দুই দলের কোচ

দুর্দান্ত মুশফিক, প্রশংসায় ভাসালেন দুই দলের কোচ

বড় স্কোর গড়েও কুমিল্লার কাছে হারলো খুলনা

বড় স্কোর গড়েও কুমিল্লার কাছে হারলো খুলনা

১৩০ রানের টার্গেটে ৬ উইকেট হারিয়ে জিতলো চট্টগ্রাম

১৩০ রানের টার্গেটে ৬ উইকেট হারিয়ে জিতলো চট্টগ্রাম

বিজয় দিবসে মাঠেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিজয়োৎসব

বিজয় দিবসে মাঠেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিজয়োৎসব