আবারও ব্যাটিং কল্যাপ্স, ২০৪ রানে গোটালো বাংলাদেশ

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৬:১৫ পিএম, ৩১ অক্টোবর ২০২৩
আবারও ব্যাটিং কল্যাপ্স, ২০৪ রানে গোটালো বাংলাদেশ

বিশ্বকাপে আরও একটি ব্যাটিং কল্যাপ্সের ম্যাচ খেললো বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র চারজন টাইগার ব্যাটার দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পেরেছে। বাকি সাতজনই ছিলেন সিঙ্গেল ডিজিটে। যার ফলস্রুতিতে ৪৫.১ ওভারে গুটিয়ে যাওয়ার আগে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২০৪ রান।

মাহমুদউল্লাহর হাফ-সেঞ্চুরির সাথে লিটন দাস ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের চল্লিশোর্ধ ইনিংসের সুবাদে এ রান করে বাংলাদেশ। শেষ দিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাট থেকে ২৫ রানের ইনিংস আসায় ২’শ পার করে টাইগাররা।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আগের ম্যাচের একাদশ থেকে একটি পরিবর্তন মাহেদি হাসানের পরিবর্তে তাওহিদ হৃদয়কে অন্তর্ভুক্ত করে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ।

ব্যাট হাতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। রানের খাতা খোলার অগেই পাকিস্তান পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে লেগ বিফোর আউট হন তানজিদ হাসান। রিভিউ নিলেও লাভ হয়নি তানজিদের।

তানজিদকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে ওয়ানডেতে দ্রুততম ১শ উইকেট শিকারের মালিক হন আফ্রিদি। এজন্য ৫১ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ৪২ ম্যাচে ১শ উইকেট নিয়ে এই রেকর্ডের মালিক নেপালের সন্দীপ লামিচানে। তবে অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ককে পিছনে ফেলে পেস বোলার হিসেবে এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে দ্রুত একশ উইকেটের মালিক বনে যান আফ্রিদি।

দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খোলেন তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। পরের ওভারে আফ্রিদির বলে মিড উইকেটে উসামা মীরকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৪ রান করা শান্ত। ব্যাটিংয়ে প্রমোশন পেয়ে চার নম্বরে নামা মুশফিকুর রহিমও সুবিধা করতে পারেননি । পেসার হারিস রউফের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ৫ রান করা মুশফিক।

২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এ ম্যাচ নিয়ে এবারের বিশ্বকাপে পাওয়ার প্লেতে সবচেয়ে ১৬ উইকেট হারালো টাইগাররা। উইকেট পতন ঠেকাতে ইনফর্ম মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে পাঁচ নম্বরে পাঠায় বাংলাদেশ দল। উইকেটে গিয়ে আরেক ওপেনার লিটন দাসের সাথে জুটি বাঁধেন মাহমুদউল্লাহ।

দেখেশুনে খেলে দলের রানের চাকা সচল করেন তারা। ১২তম ওভারে ৫০ রান পায় বাংলাদেশ। দলের রান অর্ধশতকে পৌঁছে দিয়ে স্বাচ্ছেন্দ্যে খেলতে থাকেন লিটন ও মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু ২১তম ওভারে খেই হারান লিটন। স্পিনার ইফতিখারের বলে মিড অনে আাগ সালমানকে ক্যাচ দিলে ৬টি চারে ৬৪ বলে ৪৫ রান করা লিটনের বিদায় ঘটে। মাহমুদউল্লাহ-লিটন জুটি ৮৯ বলে ৭৯ রান করেন।

লিটনের বিদায়ে ক্রিজে আসেন সাকিব। মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে আবারও বড় জুটির চেষ্টা করেন সাকিব। ২৬তম ওভারের শেষ বলে ওয়ানডেতে ২৮তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান মাহমুদউল্লাহ। এ জন্য ৫৮ বল খেলেছেন তিনি।

৩১তম ওভারে আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা মাহমুদউল্লাহ। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৭০ বলে ৫৬ রান করেন অভিজ্ঞ এ ব্যাটার।

রিয়াদের বিদায়ে ক্রিজে আসেন গত দুই ম্যাচ একাদশে সুযোগ না পাওয়া হৃদয়। ৩২তম ওভারে স্পিনার মীরের দ্বিতীয় বলে স্লগ সুইপে মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারেন হৃদয়। পরের ডেলিভারিতে স্লিপে ইফতিখারকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ৭ রান করা হৃদয়।

১৪০ রানে ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে হৃদয়ের আউটের পর মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন সাকিব। ৩৭তম ওভারে ইফতিখারের তিন বলে টানা তিনটি চার মেরে এবারের আসরে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন টাইগার দলপতি।

কিন্তু দলীয় ১৮৫ রানে রউফের শর্ট বলে তুলে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে সালমানকে ক্যাচ দেন সাকিব। ৪টি চারে ৬৪ বল খেলে এবারের আসরে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন তিনি। সপ্তম ব্যাটার হিসেবে ৪০তম ওভারে সাকিবের আউটের পর, পাকিস্তানের পেসার পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিমের তোপে বেশি দূর যেতে পারেনি বাংলাদেশ।

লোয়ার অর্ডারের শেষ ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ৪৫.১ ওভারে ২০৪ রানে অলআউট কর দেন ওয়াসিম। ১৯ রানে শেষ ৪ উইকেট হারায় টাইগাররা। লোয়ার অর্ডারে ১টি করে চার-ছক্কায় ৩০ বলে ২৫ রান করেন মিরাজ।

পাকিস্তানের আফ্রিদি ২৩ রানে ও ওয়াসিম ৩১ রানে ৩টি করে উইকেট নেন।


শেয়ার করুন :