৩৬৭ রানের বিপরীতে বাংলাদেশের প্রয়োজন ‘আট বল’

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ১১:০১ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০১৮
৩৬৭ রানের বিপরীতে বাংলাদেশের প্রয়োজন ‘আট বল’

জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন না করিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অপরাজিত ১০১ ও মোহাম্মদ মিথুনের ৬৭ রানের সুবাদে ৬ উইকেটে ২২৪ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে নেমে ২ উইকেটে ৭৬ রান করেছে জিম্বাবুয়ে। ফলে ঢাকা টেস্ট জয়ের জন্য ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ৮ উইকেট, অপরদিকে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ৩৬৭ রান।

ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২১৮ রানের লিড ছিল বাংলাদেশ। অর্থাৎ ম্যাচ জয়ের জন্য জিম্বাবুয়েকে ৪৪৩ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্যে চতুর্থ দিন শেষে ২ উইকেটে ৭৬ রান করে জিম্বাবুয়ে।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচের তৃতীয় দিনই জিম্বাবুয়েকে প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। ৭ উইকেটে বাংলাদেশের করা ৫২২ রানে জবাবে ৩০৪ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। ফলে ২১৮ রানে পিছিয়ে থেকে ফলোঅনে পড়ে জিম্বাবুয়ে।

তবে ফলোঅনের ব্যাপারে তৃতীয় দিন কিছুই জানায়নি বাংলাদেশ। নিজেদের সিদ্বান্তকে রহস্যের মধ্যেই রেখেছিল তারা। কিন্তু চতুর্থ দিন সকালে নিজেদের রহস্য ফাঁস করে টাইগাররা। জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন না করিয়ে নিজেরাই ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ।

ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে ব্যাটিং শুরু করেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ৯, ১০, ১০ ও ২৫ রানে চারটি উইকেট হারায় টাইগাররা। সবার আগে ফিরেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। এরপর ইমরুলের পথ অনুসরণ করেন লিটন, মোমিনুল ও প্রথম ইনিংসের ডাবল-সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম। ইমরুল ৩, লিটন ৬, মোমিনুল ১ ও মুশফিক ৭ রান করেন। বাংলাদেশের চার ব্যাটসম্যানকে ভাগাভাগি করে শিকার করেছেন জিম্বাবুয়ের দুই পেসার কাইল জার্ভিস ও ডোনাল্ড তিরিপানো।

২৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে মহাচিন্তায় পড়ে স্বাগতিকরা। এমন অবস্থায় প্যাভিলিয়নে অধিনায়কের সাথে বেশ কয়েকবারই আলাদা কথা বলতে দেখা গেছে কোচ স্টিভ রোডসকে। কথা বলা শেষে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে ঘাড়ে হাত দিয়ে উৎসাহ দেয়ার ভঙ্গিমাও করেছেন রোডস। কোচের কাছ থেকেই সাহস নিয়ে ক্রিজে যান মাহমুদুল্লাহ। তখন ক্রিজে ছিলেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা মোহাম্মদ মিথুন। তিনি নিজেও ডাবল চিন্তায় ছিলেন। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে ফিরে যাবার চাপের সাথে দলের মহাবিপদে পড়ার চিন্তা ছিল মিথুনেরও।

উইকেটে গিয়ে মিথুনের সাথে নিজের পরিকল্পনার কথা জানান মাহমুদউল্লাহ। সেটি ছিল দেখে শুনে ধীরলয়ে রান তোলা। কাজটি ভালোভাবে করেছেন দু’জনে। উইকেটের সাথে দ্রুত মানিয়ে নিয়ে বাংলাদেশের রানের চাকা সচল করছেন মিথুন ও মাহমুদউল্লাহ। ফলে শত রান পেরিয়ে দলীয় স্কোর দেড়শ দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এর মাঝে অভিষেক টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন মিথুন। কিছুক্ষণ পর হাফসেঞ্চুরির দেখা পান মাহমুদউল্লাহও।

হাফ সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংসটি বড় করার চেষ্টা করে ব্যর্থই হন মিথুন। জিম্বাবুয়ের অফ-স্পিনার সিকান্দার রাজাকে ছক্কা মারার পরের ডেলিভারিতেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ১১০ বলে ৬৭ রান করেন মিথুন। পঞ্চম উইকেটে ১৬৩ বল মোকাবেলা করে ১১৮ রান যোগ করেন মিথুন-মাহমুদউল্লাহ জুটি।

মিথুনের ফেরার সময় মাহমুদুল্লাহর রান ৫৩। এ অবস্থায় দলের লিড বড় করাই প্রধান লক্ষ্য ছিল অধিনায়কের। কিন্তু সাত নম্বরে নামা আরিফুল হক হতাশ করেন। ৫ রান করে ফিরেন তিনি। এতে টেল-এন্ডারদের নিয়ে দলের স্কোর কোথায় নিয়ে যেতে পারেন মাহমুদউল্লাহ -সেটিই দেখার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

মাহমুদউল্লাহ সফল হয়েছেন, দলের স্কোর ভালো অবস্থানে তো পৌঁছে দিয়েছেনই সেই সাথে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিও তুলে নিয়েছেন তিনি। আট বছরের বেশি সময় পর দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তিনি। সর্বশেষ ও সর্বপ্রথম ২০১০ সালে হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ।

নিজের সেঞ্চুরির পরই বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের ঘোষণা দেন মাহমুদউল্লাহ। ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ১২২ বলে অপরাজিত ১০১ রান করেন তিনি। মিরাজের সংগ্রহ ছিল অপরাজিত ২৭ রান। সপ্তম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৭৩ রান যোগ করেন মাহমুদউল্লাহ-মিরাজ। ৬ উইকেটে ২২৪ রানে ইনিংস ঘোষণা দেয়ায় ম্যাচ জয়ের জন্য ৪৪৩ রানের লক্ষ্য পায় জিম্বাবুয়ে।

সেই লক্ষ্যে দিনের শেষ সেশনে ৩০ ওভার ব্যাট করে ২ উইকেটে ৭৬ রান তুলেছে জিম্বাবুয়ে। অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ২৫ ও ব্রায়ান চারি ৪৩ রানে ফিরেন। ব্রেন্ডন টেইলর ৪ ও সিন উইলিয়ামস ২ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের তাইজুল ও মিরাজ ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।

এখন ৩৬৭ রানের বিপরীতে বাংলাদেশের প্রয়োজন সঠিক আটটি বল। অর্থাৎ সঠিক আটটি বলে জিম্বাবুয়ের আট ব্যাটম্যানকে ফেরাতে পারলেই জয় নিশ্চিত। অন্যথায় উইকেট হাতে রেখে জিম্বাবুয়ে দিন পার করতে পারলে ম্যাচটি ড্র হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।


শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন না করিয়ে ব্যাট হাতে বাংলাদেশ

জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন না করিয়ে ব্যাট হাতে বাংলাদেশ

মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি, জিম্বাবুয়ের টার্গেট ৪৪৩

মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি, জিম্বাবুয়ের টার্গেট ৪৪৩

টেইলরের জ্বলে উঠা কি শুধু বাংলাদেশ?

টেইলরের জ্বলে উঠা কি শুধু বাংলাদেশ?

দায়িত্বটা উপভোগ করছেন তাইজুল

দায়িত্বটা উপভোগ করছেন তাইজুল