ক্যারিবিয়ানদের দ্বিতীয়বার হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৯:২৯ এএম, ২৬ জানুয়ারি ২০২১
ক্যারিবিয়ানদের দ্বিতীয়বার হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ

তিন ম্যাচ ওয়ানডে ফেবারিট হিসেবে খেলেছে বাংলাদেশ। ঢাকায় প্রথম দুই ম্যাচে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করা বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল হোয়াইটওয়াশের। সিরিজের শেষ ম্যাচে সেটিই হলো। সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওয়ানডে সিরিজে দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ।

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। অধিনায়ক তামিম ইকবাল-সাকিব আল হাসান-মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাফ-সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৯৭ রান করে বাংলাদেশ।

জবাবে ১৭৭ রানে অলআউট হয়ে হার বরণ করে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর ফলে তিনি ম্যাচ সিরিজের ৩-০ তে জয় পেল টাইগাররা। এর আগে ২০০৯ সালে প্রথম ও শেষবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটয়াশ করেছিল বাংলাদেশ।

সিরিজের শেষ ম্যাচে ব্যাট করতে শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি টাইগারদের। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই ওপেনার লিটন দাসকে হারায় বাংলাদেশ। ফলে খালি হাতেই বিদায় নেন লিটন। দলীয় ১ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর অপর ওপেনার তামিম ইকবালের সঙ্গী হন তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টায় ছিলেন তামিম-শান্ত জুটি।

শান্তর তিনটি ও তামিমের প্রথম বাউন্ডারিতে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠার পথে আবারও ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। নবম ওভারের চতুর্থ বলে তামিম-শান্তর পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান ডান-হাতি পেসার কাইল মায়ারস। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন শান্ত। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে না পরলে ৩০ বলে ৩টি চারে ২০ রানে থামে শান্তর ইনিংস।

শান্তর বিদায়ের পর উইকেটে সেট হতে খুব বেশি সময় নেয়নি তামিম-সাকিব জুটি। তাদের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ২৩ ওভারে শতরানের কোটা স্পর্শ করে টাইগাররা। এরপর অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদের ২৬তম ওভারের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৪৯তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তামিম। হাফ-সেঞ্চুরি পাওয়া ওভারেই ইনিংসের প্রথম ছক্কা মারেন তামিম।

২৮তম ওভারের শেষ বলে ব্যক্তিগত ৬৪ রানে আউট হন তামিম। আলজারি জোসেফের বলে মিড উইকেটে আকিল হোসেনের তালু বন্দি হওয়ার আগে ৮০ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন টাইগার অধিনায়ক। তৃতীয় উইকেটে সাকিবের সাথে ১২১ বলে ৯৩ রান যোগ করে বাংলাদেশকে ভালো অবস্থায় রেখে যান তামিম।

অধিনায়ককে হারানোর পর সাবধানী হয়ে পড়েন সাকিব। সাথে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। ২ ওভার উইকেটে কাটানোর পর দু’টি বাউন্ডারি মেরে ভালো শুরু করেন মুশফিক। এরপর সাকিবের সাথে রানের চাকা সচল রাখেন মুশফিক। তবে ৩৬তম ওভারে স্বস্তির হাসি সাকিবের ব্যাটে। ওভারে শেষ বলে ১ রান নিয়ে ২০৯ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৪৮তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন বিশ্ব সেরা এ অলরাউন্ডার।

৭৮ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করে রেমন রেইফারের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৮১ বলে ৩টি চারে ৫১ রান করেন সাকিব। চতুর্থ উইকেটে মুশফিক-সাকিব ৫৬ বলে ৪৮ রান যোগ করেন। ৩৭তম ওভারে দলীয় ১৭৯ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন সাকিব। এরপর মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ দলের স্কোর বড় করেন।

৪৪তম ওভারে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৯তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান মুশফিক। ৪৭ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করে দ্রুত রান তোলার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন। রেইফারের করা ৪৭তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাকালেও পরের বলে আউট হন এ ডান-হাতি ব্যাটসম্যান। ৫৫ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৪ রান করেন মুশফিক।

মুশফিকের বিদায়ের পর বাংলাদেশের রানের চাকা দ্রুত ঘুড়িয়েছেন মাহমুুদউল্লাহ। শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২২তম অর্ধশতকের দেখা পান তিনি। অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা ক্যারিবিয় পেসার কিওন হার্ডিংয়ের করা ইনিংসের শেষ ওভারে দু’টি ছক্কা মারেন মাহমুদউল্লাহ। তার ঝড়ো গতির ইনিংসে শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ২৯৭ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।

৩টি করে চার-ছক্কায় ৪৩ বলে ৬৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ। এছাড়া সৌম্য সরকার ৭ রানে আউট হলেও প্রথমবারের মতো সিরিজে খেলতে নামা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ২ বলে অপরাজিত ৫ রান করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জোসেফ- রেইফার ২টি করে উইকেট নেন।

২৯৮ রানের টার্গেটে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওপেনার কির্জন ওটেলিকে ১ রানে থামিয়ে দেন বাংলাদেশের পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। আরেক ওপেনার সুনীল অ্যামব্রিসকেও শিকার করেন ফিজ। লেগ বিফোর হবার আগে ১৩ রান করেন তিনি।

এরপর মুস্তাফিজের সাথে উইকেট শিকারের আনন্দে মাতেন আগের ম্যাচের হিরো স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। চার নম্বরে নামা কাইল মায়ারসকে (১১) লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন তিনি। এতে ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই চাপ আরও বাড়িয়ে দেন সাইফউদ্দিন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক মোহাম্মেদ ও এনকুমার বোনারকে বিদায় দেন সাইফউদ্দিন। বুনার ৩১ ও মোহাম্মেদ ১৭ রান করে আউট হন। ৯৩ রানে পাঁচ ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ায় ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

দলকে ম্যাচে ফেরাতে এক প্রান্ত আগলে লড়াই করেন রোভম্যান পাওয়েল। তবে অপরপ্রান্ত দিয়ে একে একে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেট তুলে নিতে থাকেন বাংলাদেশের বোলাররা। সতীর্থদের সঙ্গ না না পওয়া পাওয়েল সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন পাওয়েল। তাকে ৪৭ রানে বিদায় দিয়ে বাংলাদেশের পথের শেষ কাটা তুলে ফেলেন সাত নম্বর বোলার হিসেবে আক্রমণে আসা মিডিয়াম পেসার সৌম্য সরকার।

পাওয়েলের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে কিছুটা লড়াই করেন রেইফার। তার ২৭ রান হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। রেইফারকে নিজে ডেলিভারি নিজেই ক্যাচ নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের ইতি টানেন সিরিজে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা পেসার তাসকিন আহমেদ। শেষ পর্যন্ত ৪৪ দশমিক ২ ওভারে ১৭৭ রানে অলআউট হয় ক্যারিবীয়রা।

এ ম্যাচে আটজন বোলার ব্যবহার করেছেন তামিম। এর মধ্যে সাইফউদ্দিন ৯ ওভারে ৫১ রানে ৩টি উইকেট নেন। এছাড়া মোস্তাফিজ-মিরাজ ২টি করে, তাসকিন-সৌম্য ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিম। আর সিরিজ সেরা হয়েছেন সাকিব আল হাসান।

[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস ]


শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

তিন তারকার একই স্কোর, তৃতীয়বার চার পঞ্চাশোর্ধ্বে বাংলাদেশ

তিন তারকার একই স্কোর, তৃতীয়বার চার পঞ্চাশোর্ধ্বে বাংলাদেশ

নাম ভুলে যাওয়া ব্যাটিং কোচের সাথে সাকিবের দুষ্টুমি

নাম ভুলে যাওয়া ব্যাটিং কোচের সাথে সাকিবের দুষ্টুমি

তাসকিনের পরিবর্তে সোহাগ গাজী, এনওসি পেল সবাই

তাসকিনের পরিবর্তে সোহাগ গাজী, এনওসি পেল সবাই

ব্যাটসম্যানদের দুষলেন জেসন মোহাম্মদ

ব্যাটসম্যানদের দুষলেন জেসন মোহাম্মদ