কলকাতার সর্বকালের সেরা দলে সাকিব

ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে সবচেয়ে জনপ্রিয় আসর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) গত ১২ বছরে কলকাতা নাইট রাইডার্সে (কেকেআর) হয়ে অনেক মহাতারকা ক্রিকেটার খেলেছেন। সবাই সমান সাফল্য পাননি। তবে কেকেআর-এর জার্সি গায়ে দারুণ মাতিয়েছেন।

গত এক যুগের সেসব ক্রিকেটারদের ভিড় থেকে সর্বকালের সেরা নাইট রাইডার্স একাদশ তৈরি করেছে কলকাতা। মোট ১৩ জনকে নিয়ে গড়া সেই দলে রয়েছেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। দলের অধিনায়ক হিসেবে রয়েছেন গৌতম গম্ভীর।

ব্রেন্ডন ম্যাককালাম
ওপেনিংয়ে অবশ্যই ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। ২০০৮ সালে আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচেই বেঙ্গালুরুতে সাবেক কিউই ওপেনারের ১৫৮ রানের বিধ্বংসী ইনিংস ক্রিকেটদুনিয়াকে মাতিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

গৌতম গম্ভীর (অধিনায়ক)
ওপেনিংয়ে ম্যাককালামের সঙ্গী গৌতম গম্ভীর। এ দলের অধিনায়কও তিনি। দুইবার গম্ভীরের নেতৃত্বে আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কলকাতা। কলকাতার হয়ে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি রান গম্ভীরেরই আছে। ৩১.৬১ গড়ে করেছেন ৩০৬৫ রান তিনি। স্ট্রাইক রেট ১২৪.২৮। এছাড়া কলকাতার হয়ে টানা ৭ মৌসুম খেলেছেন তিনি।

রবিন উত্থাপা
তিন নম্বরে রয়েছেন রবিন উথাপ্পা। ম্যাককালাম না চাইলে উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্বও পালন করতে পারেন তিনি। নাইট রাইডার্সের রবিন হয়ে ৩০.৪৮ গড়ে ২৪৩৯ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ১৩৬.২৫। ২০১৪ সালে নাইট রাইডার্সের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নেপথ্যে বড় অবদান ছিল তার। ৬৬০ রান করে জিতেছিলেন অরেঞ্জ ক্যাপ।

মানিশ পাণ্ডে
একাদশের চার নম্বরে রয়েছেন মানিশ পাণ্ডে। নাইটদের জার্সিতে মিডল অর্ডারের ভরসা ছিলেন তিনি। ৩১.৭৫ গড়ে ১২৫.১২ স্ট্রাইক রেটে তিনি করেছেন ১২৭০ রান। ৪ মৌসুম ধরে তিনি ধারাবাহিকতা দেখিয়েছেন। ২০১৪ সালের আইপিএল ফাইনালে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছিলেন মানিশ।

আন্দ্রে রাসেল
ক্যারিবীয়ান দানবকে দিয়ে শুরু একাদশে অল-রাউন্ডারদের আগমন। পাঁচ নম্বরে রয়েছেন আন্দ্রে রাসেল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিগ-হিটিং অল-রাউন্ডার একক পারফর্মেন্সেই নাইটদের বেশ কিছু ম্যাচ জিতিয়েছেন। আইপিএলে কেকেআরের হয়ে ১৩৪২ রান করেছেন, যার গড় ৩৫.৩১। স্ট্রাইক রেট চোখ কপালে তোলার মতো ১৮৮.৭৪। অন্তত ১২৫ ডেলিভারি খেলেছেন, আইপিএলে এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেট। পাশাপাশি নিয়েছেন ৫৪ উইকেট।

সাকিব আল হাসান
৬ নম্বরে রয়েছেন বাংলাদেশের বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে তিনি যেমন নির্ভরযোগ্য, তেমনি বল হাতে সমানতালে সার্ভিস দেন। বোলিংয়ে কিপ্টেমি সাকিবের স্বভাব। তার উপস্থিতি দলে ভারসাম্য বাড়িয়ে দিত। ৭ বছর কলকাতা নাইট রাইডার্সে ছিলেন সাকিব। কলকাতার দু’বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নেপথ্যে ব্যাটে-বলে অবদান রাখেন। দুই বছর আগে নাইটদের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়। নিষিদ্ধ হওয়ার আগে খেলেছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদে।

সুনিল নারিন
সাতে আরও এক ক্যারিবিয়ান অল-রাউন্ডার। সুনিল নারিনের পরিচিতি অবশ্য রহস্যময় স্পিনার হিসেবে। এ অফ স্পিনারের বল বুঝতে ব্যাটসম্যানদের ঘাম ছুটে যায়। পাশাপাশি প্রয়োজনে তিনি ওপেনার হিসেবে নেমেও বড় শট নিতে পারেন। বেগুনি জার্সিতে ১২২ উইকেট নেওয়া নারিন হলেন কলকাতার তুরুপের তাস। তার ইকনমি রেট মাত্র ৬.৬৭।

পীযূষ চাওলা
একাদশের আট নম্বরে আছেন লেগস্পিনার পীযূষ চাওলা। নাইট রাইডার্সের হয়ে তিনি দ্বিতীয় সর্বাধিক উইকেট শিকারী। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে তিনিই সর্বাধিক উইকেটের মালিক। ২৭.৮০ গড়ে পীযূষ নিয়েছেন ৬৬ উইকেট। পাশাপাশি চাপের মুখে ব্যাট হাতেও দলের বিপদে অবদান রাখতে পারেন।

কুলদীপ যাদব
দলে আছেন চায়নাম্যান কুলদীপ যাদব। রহস্যময় এ স্পিনার কেকেআরের হয়ে ২৯.৩৩ গড়ে নিয়েছেন ৩৯ উইকেট। গত বছর অবশ্য আইপিএলে ভালো বোলিং করতে পারেননি। তবে কুলদীপ যেহেতু রিস্ট স্পিনার, তাই উইকেট নেওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

উমেশ যাদব
নতুন বলে পেস আক্রমণ শুরু করবেন উমেশ যাদব। কলকাতার হয়ে তিনি চতুর্থ সর্বাধিক উইকেট শিকারী। ২৯.০২ গড়ে তিনি নিয়েছেন ৪৮ উইকেট। সমস্যা হলো, উমেশের ইকনমি রেট একটু বেশি। সাড়ে আটের বেশি। তাই ডেথ ওভারে তিনি কার্যকর নন।

মোহাম্মদ শামি
১৩ জনের দলের রয়েছেন মোহাম্মদ শামি। ভারতের অন্যতম সেরা এ পেসার নিজের অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটিয়েছেন। যদিও নাইটরা তার প্রতিভার পুরোপুরি ব্যবহার করেনি। অনেক সময়ই রিজার্ভ বেঞ্চে থাকতে হয়েছে শামিকে।

সেরা এগারজনের বাইরে রিজার্ভ বেঞ্চে রাখা হয়েছে আরও দু’জনকে। তাদের একজন ব্যাটসম্যান সূর্যকুমার যাদব। যাকে এক সময় ফিনিশার হিসেবে ব্যবহার করতো নাইট রাইডার্স।

বিদেশি হিসেবে রিজার্ভ বেঞ্চের অপর নামটি বেশ চমকে দেওয়ার মতো। ‘রাওয়ালপিণ্ডি এক্সপ্রেস’ খ্যাত শোয়েব আখতার। ২০০৮ সালের আইপিএলে গতির ঝড় তুলেছিলেন। ওই এক আসর খেলেই সর্বকালের সেরা দলে সুযোগ পেয়ে গেছেন তিনি।

[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস ]