স্পোর্টসমেইল২৪
দক্ষিণ আফ্রিকাকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৪ রানে অলআউট করায় ডারবান টেস্টে জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৭৪ রান। তবে চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে বড় বেকায়দায় পড়েছে বাংলাদেশ। মাত্র ৬ ওভার ব্যাট করে টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারাতে হয়েছে। বিরপীতে খাতায় যোগ হয়েছে মাত্র ১১ রান।
প্রথম ইনিংস থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার ৬৯ রানের লিড থাকায় ডারবান টেস্ট জিততে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৭৪ রান। তবে দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম (০) এবং প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মাহমুদুল হাসান জয় (৪) ফেরার পর অধিনায়ক মমিনুল হক (২) হতাশ করেন।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই ১১ রানে ৩ উইকেট হারানোর ফলে পঞ্চম ও শেষ দিনে ম্যাচ জিততে বাংলাদেশকে করতে হবে আরও ২৬৩ রান, হাতে রয়েছে ৭টি উইকেট। চতুর্থ দিন শেষে ৫ রানে নাজমুল হাসান শান্ত এবং এক বল খেলে খালি হাতে অপরাজিত রয়েছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম।
দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২০৪ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। এর আগে প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার ৩৬৭ রানের জবাবে ২৯৮ রান করে বাংলাদেশ। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ৬৯ রানের লিড পায় স্বাগতিকরা।
চতুর্থ দিন সকালে সময় নিয়ে উইকেটে সেট হয়ে যান এরইউ ও এলগার। তবে তাদের পথে বাঁধ সাধেন বাংলাদেশের পেসার এবাদত হোসেন। এরইউকে লেগ বিফোর আউটের আবেদন করেছিল বাংলাদেশ। তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে এরইউর বিদায় নিশ্চিত হলে ৫১ বলে ৮ রানের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে প্রোটিয়া ওপেনারের।
এরইউকে হারানোর পর কিগার পিটারসেনকে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ১শ পার করেন এলগার। আর এমনটি হতে পারে অনেকটাই বাংলাদেশ ফিল্ডারদের কল্যাণে। ব্যক্তিগত ৩৪ এবং ৪৩ রানে যথাক্রমে শান্ত ও ইয়াসির আলি ক্যাচ মিস করলে জীবন পান এলগার। দু’বার জীবন পেয়ে ২১তম টেস্ট হাফ-সেঞ্চুরি তুলেন এলগার।
এলগারের মতো পিটারসেনকে জীবন দেয় বাংলাদেশ। খালেদ আহমেদের করা ইনিংসের ২৬তম ওভারের তৃতীয় বলে পিটারসেনকে লেগ বিফোর আউটের আবেদন করে বাংলাদেশ। তবে সেটি নাকচ করে দেন আম্পায়ার। কিন্তু এবার আর রিভিউ নেয়নি বাংলাদেশ। তাই এ যাত্রায় বেঁচে যান পিটারসেন। পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, নিশ্চিত লেগ বিফোর ছিলেন ১৪ রানে থাকা পিটারসেন। বাংলাদেশের ভুলে ১ উইকেটে ১০৫ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
বিরতি থেকে ফিরে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন পেসার তাসকিন। এবারও রিভিউর উপর নির্ভর করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এলগারের বিপক্ষে বাংলাদেশের করা লেগ বিফোর আবেদন নাকচ করেন অন-ফিল্ড আম্পায়ার। ফলে রিভিউ নিয়েই এলগারকে বিদায় দেয় বাংলাদেশ। নিজের ২৭তম জন্মদিনের দিন এলগারের উইকেট নিলেন তাসকিন। ৭টি চারে ১০২ বলে ৬৪ রান করেন এলগার। দ্বিতীয় উইকেটে ১১৪ বলে ৬৮ রান যোগ করেন এলগার ও পিটারসেন।
এলগারের বিদায়ের কিছুক্ষণ পর থামেন পিটারসেনও। ১৪ রানে জীবন পাওয়ার পর রান আউট থেকে বেঁচেও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ৪৩তম ওভারে মিরাজের বলে শর্ট লেগে জয়ের দুর্দান্ত ক্যাচে বিদায় নেন তিনি। ৪টি চারে ৮৫ বল খেলে ৩৬ রান করেন পিটারসেন।
পিটারসেনকে তুলে নেওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার উপর চাপ বাড়ান মিরাজ ও এবাদত। তেম্বা বাভুমাকে এবার আর বড় ইনিংস খেলতে দেননি এবাদত। তবে এই উইকেটের পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল ইয়াসিরের। স্লিপে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন ইয়াসির। ৪ রানে আউট হন প্রথম ইনিংসে ৯৩ রান করা বাভুমা।
এরপর কাইল ভেরিনিকে আউট করেন মিরাজ। ভেরিনিকে ৬ থামাতে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন সাদমান। দ্বিতীয় সেশনে দক্ষিণ আফ্রিকার ৪ উইকেট নেয় বাংলাদেশের বোলাররা। ফলে দ্বিতীয় সেশনটি নিজেদের করে রাখে তারা। এ সেশনে দক্ষিণ আফ্রিকা ২৮ ওভারে ৫২ রানের বেশি তুলতে পারেনি।
বিরতির পর দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের সুবিধা করতে দেয়নি মিরাজ-তাসকিন ও এবাদতরা। ৩৬ রানে প্রোটিয়াদের শেষ ৫ উইকেট তুলে নেন তারা। এর মধ্যে দু’টি রান আউট ছিল। মুল্ডারকে ১১ রানে মিরাজ, কেশব মহারাজকে ৫ রানে তাসকিন ও শেষ ব্যাটার ডুয়াইন ওলিভিয়েরকে খালি হাতে বিদায় দেন এবাদত। ফলে ২০৪ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সিমোন হার্মার ১১ ও লিজাড উইলিয়ামস শূন্য রানে রান আউট হন। ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন রিকেলটন।
বাংলাদেশের মিরাজ ৮৫ রানে ও এবাদত ৪০ রানে ৩টি করে উইকেট নেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে যাওয়া তাসকিন ইনজুরি নিয়ে এ ইনিংসে বল হাতে ২৪ রানে ২ উইকেট নেন।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
