বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে অন্যান্য রাজনৈতিক দল সক্রিয় থাকলেও জামায়াতে ইসলামীর তেমন কর্মকাণ্ড নেই। তবে নতুন বাংলাদেশে ক্রীড়া ক্ষেত্রে সক্রিয় হচ্ছে দেশের এই রাজনৈতিক দল। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সাথে একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করেছেন।
নির্বাচন উত্তাপের মাঝেই গত ২২ সেপ্টেম্বর (সোমবার) মিরপুরে বিসিবির কার্যালয়ে সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলে সাথে জামায়াতের যুব ও ক্রীড়া বিভাগের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করেছেন।
বিসিবি সভাপতির সাথে হঠাৎ এমন সাক্ষাতের বিষয়টি নিয়ে দলটির কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য এবং প্রতিনিধি দলে সদস্য ডা. মোবারক হোসেন জানান, সাক্ষাতে ক্রীড়াঙ্গন ঢেলে সাজানোর নানা বিষয় নিয়ে বিসিবি সভাপতির সাথে কথা হয়েছে।
আমাদেরও প্রতিনিধি থাকবে (ভবিষ্যতে)। ক্রীড়াঙ্গনে আমাদের ভূমিকা সবার জন্য মুক্ত থাকবে। আমরা চাই, ক্রীড়াঙ্গনটা একটা সুষ্ঠুধারার অঙ্গন হোক।
বিস্তারিত জানতে চাইলে স্পোর্টসমেইলকে তিনি বলেন, “সুষ্ঠু বিনোদন এবং তরুণ প্রজন্মরা যেন সত্যিকার অর্থে মেধা ভিত্তিক সুযোগ পায়। ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সে রকম একটা পরিবেশ চায়। ক্রীড়াঙ্গনে যারা কাজ করেন, সেখানে যেন মেধাবীরা স্থান পান, সেভাবে ঢেলে সাজানোর জন্য আমরা বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছি।”
বিসিবি সভাপতির সাথে সাক্ষাৎ করার আগে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল উপদেষ্টার সাথেও সাক্ষাৎ করেছেন বলে জানান তিনি।
বিসিবি সভাপতির সাথে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দল, ছবি-সংগৃহীত
বিসিবির নির্বাচন নিয়ে কোন কথা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে ডা. মোবারক হোসেন বলেন, “না, নির্বাচন নিয়ে কোন কথা বলেনি। আমরা মূলত ক্রীড়াঙ্গনটাকে কিভাবে আরও সুন্দর করে সাজানো যায় এবং সবাই যেন সুযোগ পায় -এসব নিয়ে কথা বলছি।”
“যেই থাকুক (বিসিবির দায়িত্বে) বা আসুক, তিনি যেন ক্রীড়াঙ্গনটাকে সুষ্ঠভাবে চালান। যোগ্য, ভালো এবং সবার জন্য উপকৃত হবে -এমন ব্যক্তিকে আমরা চাই।”- বলেন তিনি।
বিসিবিতে এবারের নির্বাচনে নিজেদের কোন প্রার্থী না থাকার কথা জানালেও ভবিষ্যতে জামায়াতে ইসলামী যুক্ত হবে বলে জানান কেন্দ্রীয় এ নেতা।
ডা. মোবারক হোসেন বলেন, “আমাদেরও প্রতিনিধি থাকবে (ভবিষ্যতে)। ক্রীড়াঙ্গনে আমাদের ভূমিকা সবার জন্য মুক্ত থাকবে। আমরা চাই, ক্রীড়াঙ্গনটা একটা সুষ্ঠুধারার অঙ্গন হোক।”
ভবিষ্যতে ক্রীড়াঙ্গনে জামায়াতে ইসলামী ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, “সবার জন্য উন্মুক্ত রাখার ব্যবস্থায় ফেডারেশন কিংবা বোর্ডগুলোকে ভালোভাবে সংস্কার করে কার্যকর ভূমিকা পালন করা, সেখানে যেন দুর্নীতি, অনিয়ম বা বৈষম্য না থাকে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কাজ করবো, ইনশা আল্লাহ।”
ক্রীড়াঙ্গনে জামায়াতে ইসলামী সক্রিয়ভাবে যুক্ত হলে নারী খেলোয়াড়দের জন্য কোন শঙ্কা তৈরি হবে কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. মোবারক বলেন, “এটা জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার। ডাকসু নির্বাচনের আগেও আপনারা এমন অপপ্রচার শুনেছেন -এগুলো আসলে অপবাদ।”
তিনি বলেন, “ইসলাম সবার স্বাধীনতা দিয়েছে, যার যার কর্মস্থানে শালীনতা বজায় রেখেই সবাই কাজ করবে। এখানে জামায়াত আসলেই যে এগুলো বন্ধ হয়ে যাবে, কাজ হবে না -এগুলো নেতিবাচক অপপ্রচার।”
ডা. মোবারক হোসেন আরও বলেন, “নারীদের একটা বিশাল সংখ্যা রয়েছেন যারা দেশের জন্য ভূমিকা রাখেন। তাদেরকে পিছিয়ে ফেলার সুযোগ নেই, তাদেরকে এগিয়ে দিতে হবে। আমরা এমন একটা পরিবেশ চাই যেখানে মেয়েরা পর্দার ভেতর থেকে শালীনভাবে প্রত্যেকটা অঙ্গনে ভূমিকা পালন করবে।”