সুপার ওভারে কপাল পুড়লো সিলেটের

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ১০:৪৫ পিএম, ০২ জানুয়ারি ২০২০
সুপার ওভারে কপাল পুড়লো সিলেটের

বঙ্গবন্ধু বিপিএলের প্রথমবারের মতো খেলা হলো সুপার ওভার। সিলেট পর্বের প্রথম দিনে স্বাগতিক সিলেট থান্ডার ও কুমিল্লা ওয়ারিয়ার্সের মধ্যকার ম্যাচটি গড়ায় সুপার ওভারে।

সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করে স্বাগতিক সিলেট থান্ডার। দলের পক্ষে ব্যাট হাতে মাঠে নামেন দুই বিদেশি ক্রিকেটার, আন্দ্রে ফ্লেচার এবং শেরফান রাদারফোর্ড। অন্যদিকে কুমিল্লার হয়ে বল করেন মুজিব উর রহমান।

আফগান অফস্পিনারের প্রথম বলেই ফ্লেচার বাউন্ডারি হাঁকালেও পরে আর তেমন কিছুই করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে মাত্র ৭ রান করে সিলেট থান্ডার।

জয়ের জন্য ৮ রানের লক্ষে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের পক্ষে ব্যাট হাতে মাঠে নামেন সৌম্য সরকার এবং ডেভিড উইজ। আর সিলেটের পক্ষে বল করেন নাভিন উল হক।

প্রথম বলে ২ রান নেন ডেভিড উইজ। পরের বলে একটি লেগবাই। তৃতীয় বলে স্ট্রাইকে এসেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে রনি তালুকদারের ক্যাচ হন সৌম্য সরকার। ৩ বলে ৩ রান সংগ্রহ করে একটি উইকেট হারায় কুমিল্লা। ফলে শেষ ৩ বলে কুমিল্লার লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫ রান।

স্ট্রাইকে তখন ডেভিড উইজ। নাভিনের চতুর্থ বল বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে সমতায় নিয়ে নেন তিনি। এরপর পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নিয়ে দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। এক বল হাতে রেখেই সুপার ওভারে জয়ের হাসি হাসে কুমিল্লা। অন্যদিকে নিজ মাঠে সুপার ওভারে কপাল পুড়ে সিলেট থান্ডারের।

এ জয়ে প্লে-অফের দৌঁড়ে টিকে থাকলো কুমিল্লা। ৯ খেলায় ৪ জয় ও ৫ হারে ৮ পয়েন্ট কুমিল্লার। আর এ হারে প্লে-অফের আশা শেষ হয়ে গেল সিলেটের। ৯ খেলায় ১ জয় ও ৮ হারে ২ পয়েন্ট তাদের। শেষ তিন ম্যাচে জিতলেও প্লে-অফে খেলার কোন সুযোগ নেই সিলেটের।

এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেয় সিলেট থান্ডার। ব্যাট হাতে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন সিলেটের শ্রীলঙ্কার বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান উপুল থারাঙ্গা। দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যান জাইলকে নিয়ে ৪ ওভারে ৪২ রান যোগ করেন থারাঙ্গা। এর মধ্যে মাত্র ১০ রান অবদান রেখে এবাদত হোসেনের শিকার হয়ে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে প্যাভিলিয়নে ফিরেন জাইল।

এরপর এ ম্যাচে অধিনায়ক সৌম্য সরকারকে নিয়ে ইনিংসের ভিত গড়েন থারাঙ্গা। কিন্তু বড় জুটি গড়তে ব্যর্থ হন তারা। সিলেটের অফ-স্পিনার সোহাগ গাজীর ডাবল আঘাতে থারাঙ্গা ও সৌম্য ফিরেন। ৫ রান করে ফিরেন সৌম্য। আর ৯টি চারে ৩১ বলে ৪৫ রান করেন এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা থারাঙ্গা।

থারাঙ্গার পর সিলেটের দুই বোলার এবাদত-রাদারফোর্ডের তোপে কুমিল্লার হয়ে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রানের সংগ্রহ পায় কুমিল্লা। সিলেটের এবাদত-রাদারফোর্ড ৩টি করে ও গাজী ২টি উইকেট নেন।

১৪১ রানের সহজ লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে সিলেট। ৫ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জনসন চালর্স শূন্য ও রনি তালুকদার ২ রান করে ফিরেন। এরপর শুরুর ধাক্কা সামাল দিলেও বেশি দূর যেতে পারেননি উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ মিথুন ও রাদারফোর্ড।

২৭ রানের জুটি গড়েন তারা। এ জুটি ভেযে যাওয়ার পর ৩৩ রানে পাঁচ উইকেট হারায় সিলেট। ফলে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে তারা। মিথুন ১৩, রাদারফোর্ড ১৫ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে ফ্লেচার ১ রান করে ফিরেন।

এ অবস্থা থেকে দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করে সফল হন নাজমুল হোসেন মিলন ও সোহাগ গাজী। গাজীর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে লাইন-লেন্থহীন হয়ে পড়ে কুমিল্লার বোলিং। ২৯ বলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন গাজী। এতে দলও পৌঁছায় তিন অংকে। কিন্তু এরপরই মিনি ধস নামে সিলেটের লোয়ার-অর্ডারে।

১৭তম ওভারে ৩ উইকেট তুলে নেন কুমিল্লার আফগানিস্তানের স্পিনার মুজিব উর রহমান। মিলন ১৩, নাঈম হাসান শূন্য ও গাজী ৩১ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫২ রান করেন। ষষ্ঠ উইকেটে ৫২ বলে ৭০ রান যোগ করেন গাজী-মিলন।

১০৪ রানে সিলেটের অষ্টম উইকেট পতনের পর কুমিল্লার জয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তবে হাল ছাড়েনি সিলেটের নবম ও দশম ব্যাটসম্যান যথাক্রমে আফগানিস্তানের নবীন উল হক ও মনির হোসেন। নবম উইকেটে ১৬ বলে ৩১ রান যোগ করেন তারা।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৫ রানের সমীকরণ দাঁড়ায় সিলেটের সামনে । আল-আমিনের প্রথম দুই ডেলিভারিতে দুই চারে ৮ রান নেন নবীন। তৃতীয় বলে আউট হন তিনি। এরপরের দুই বলে চার (ওয়াইডসহ) রান পায় সিলেট। ফলে শেষ বলে ২ রান দরকার পড়ে সিলেটের। কিন্তু ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হন মনির। ফলে ১৪০ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচ টাই করে সিলেট। এতে ম্যাচটি সুপার ওভারে গড়ায়। কুমিল্লার মুজিব ১২ রানে ৪ উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স : ১৪০/৯, ২০ ওভার (থারাঙ্গা ৪৫, অঙ্কন ১৯*, রাদারফোর্ড ৩/১৯)
সিলেট থান্ডার : ১৪০/৯, ২০ ওভার (গাজী ৫২, নাভিন ১৫, মুজিব ৪/১২)।

ফল : সুপার ওভারে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের জয়
ম্যাচ সেরা : মুজিব উর রহমান (কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স)।


শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

সুপার ওভারের নতুন নিয়ম করলো আইসিসি

সুপার ওভারের নতুন নিয়ম করলো আইসিসি

রংপুরের বিপক্ষে প্রতিশোধ নিল রাজশাহী

রংপুরের বিপক্ষে প্রতিশোধ নিল রাজশাহী

ছিলেন না একাদশে, সুযোগ পেয়েই গড়লেন রেকর্ড

ছিলেন না একাদশে, সুযোগ পেয়েই গড়লেন রেকর্ড

ধোনির নেতৃত্বে ক্রিকইনফোর ওয়ানডে একাদশে সাকিব

ধোনির নেতৃত্বে ক্রিকইনফোর ওয়ানডে একাদশে সাকিব