মালয়েশিয়ার বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৮:৫৭ পিএম, ১৪ জুন ২০২২
মালয়েশিয়ার বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ

এএফসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলার স্বপ্ন আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। তবে বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে মালেয়শিয়ার বিপক্ষে জয় তুলে হতাশা কাটাতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেটা আর হলো কই! স্বাগতিকদের বিপক্ষে উল্টো ৪-১ গোলের ব্যবধানে হেরে বাছাইপর্ব শেষ করলো হ্যাবিয়ের কাবেরারোর দল। অন্যদিকে, বাংলাদেশকে হারিয়ে এশিয়ান কাপে খেলায় যোগ্যতা অর্জন করলো মালয়েশিয়া।

গ্রুপ ‘ই’তে বাকি দুই প্রতিপক্ষের চেয়ে (বাহরাইন, তুর্কিমিস্তান) মালয়েশিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের জন্য লড়াই করাটা সহজ হওয়ার কথা ছিল। ফিফা র‍্যাংকিংয়ের ১৫৩ নম্বর দল মালয়েশিয়ার বিপক্ষে আগের দুইবারের দেখায় রুখে দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এই ম্যাচে স্বাগতিকদের বিপক্ষে এক হালি গোল হজম করেছে বিশ্বনাথরা।

মঙ্গলবার (১৪ জুন) মালইয়েশিয়ার বুকিত জলিল স্টেডিয়ামে এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক মালেশিয়ার বিপক্ষে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। গ্রুপ ‘ই’তে দুই দলেরই শেষ ম্যাচ ছিল এটি।

ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশের রক্ষণভাগে হামলে পড়ে মালয়েশিয়ার ফুটবলাররা। একের পর এক আক্রমণে সফরকারীদের রক্ষণভাগকে এলোমেলো করে দেয় স্বাগতিকরা। ম্যাচের দশম মিনিটেই গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল মালয়েশিয়া। গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর দৃঢ়তায় সে যাত্রায় অক্ষত থাকে বাংলাদেশের দুর্গ। কিছুক্ষণ পরেই আরেকটি বল ক্রসবারে লাগলে আরও একবার রক্ষা পায় জামাল ভুঁইয়ার দল।

বাংলাদেশ কবে নাগাদ বিশ্বকাপ খেলবে জানেন না সালাউদ্দিন

১৬তম মিনিটে পেনাল্টি পায় মালেয়শিয়া। মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ বক্সের ভিতর থেকে বল ক্লিয়ার করলে রেফারি ফাউল ভেবে পেনাল্টি দেন। সাফাই রশিদের পেনাল্টিতে গোল পায় মালয়েশিয়া।

প্রথমার্ধ জুড়ে মালেশিয়ার আধিপাত্য থাকলেও প্রতি আক্রমণের চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের ৩১তম মিনিটে বিশ্বনাথ ঘোষের লম্বা থ্রো রাকিবের ব্যাক হেড হয়ে বল পিছনে গেলে দারুণ এক বাংলাদেশকে সমতায় ফেরান ইব্রাহীম।

তবে বেশিক্ষণ সমতায় থাকতে পারেনি জাভিয়ের ফার্নান্দেজ কাবেরারোর দল। ৩৮তম মিনিটে ডিলনের ডান পাশ থেকে নেওয়া কোনাকুনি শটে আবারও লিড পায় মালেয়শিয়া। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা জিকোর লেট ডাইভে হাতের নীচ দিয়ে বল চলে যায় বাংলাদেশের জালে। একটা গোলে জিকোর দায় থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ের মতো আজকেও প্রথমার্ধেই একাধিকবার মালেয়শিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করেছেন জিকো।

বিরতি থেকে ফেরাটা সুখকর হয়নি বাংলাদেশের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ৪৭তম মিনিটে আবারও গোল হজম করে কাবেরোর শিষ্যরা। মালয়েশিয়াকে দ্বিতীয়বার লিড এনে দেন শফিক আহমেদ। প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও বেশিরভাগ সময়েই বল ছিল বাংলাদেশের রক্ষণভাগে। ২০২৩ এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলার জন্য এই ম্যাচে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না মালয়েশিয়ার জন্য।

ডু অর ডাই ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজেদের একদম নিংড়ে দিয়েছে স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের রক্ষণভাগে একের পর এক সাড়াশি আক্রমণ চালিয়েছে মালয়েশিয়ার ফুটবলাররা। ফল পেতেও খুব বেশি দেরী করতে হয়নি। ৭৩ মিনিটে ম্যাচের চতুর্থ গোল পায় মালয়েশিয়া। বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেকটি পোতেন ড্যারেন লুক।

ডান পাশ থেকে আসা গড়ানো ক্রসে গোল করতে কোনো সমস্যাই হয়নি লুকের। বাংলাদেশের রক্ষণভাগের দুর্বলতা আরও একবার দেখা গেল এই গোলের সময়ে। তিন জন মিলেও প্রতিপক্ষের একজন স্ট্রাইকারকে কোনোরকম বাঁধা দিতে পারেনি।

বাকি সময়ে রক্ষণ থেকে উঠে আক্রমণের চেষ্টা চালিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বারবারই বল নিয়ে মালয়েশিয়ার রক্ষনেই আটকে গেছে কাবেরারো শিষ্যরা।

ম্যাচের শেষ মুহূর্তে দুই দলের খেলোয়ায়ড়দের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে রেফারিকে একাধিকবার হলুদ কার্ড দেখাতে হয়। ততক্ষণে মালয়েশিয়ার ডাগআউটে উদযাপন শুরু হয়েছে। গ্যালারিতে থাকা ৩০ হাজারের বেশি দর্শকের চিৎকারে পুরো স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ১০ হাজার দর্শকের টেকা দায়!

কেনই বা তারা উদযাপন করবে না! এই জয় দিয়েই ২০২৩ এশিয়ান কাপে অংশ নেওয়া নিশ্চিত করেছে মালয়েশিয়া। অন্যদিকে বাছাই বর্বে কোনো জয় ছাড়াই শেষ হয়েছে বাংলাদেশের।

এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের প্রথম ম্যাচে ফিফা র‍্যাংকিংয়ের ৮৯ নম্বর দল বাহরাইনের বিপক্ষে ২-০ গোলে হারলেও লড়াই করেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ১৩৪ নম্বর দল তুর্কেমিনিস্তানের বিপক্ষেও মোটামুটি ভালো খেলেছিল কাবেরারোর দল। ২-১ ব্যবধানে হারার ম্যাচে দারুণ প্রশংসিত হয়েছিল জামাল ভুঁইয়ারা।

ওই দুই দলের চেয়ে পিছিয়ে থাকা মালয়েশিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ আরও ভালো খেলবে, এমনই আশা ছিল সমর্থকদের। কিন্তু তাদের বিপক্ষেই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বাজে ম্যাচ খেললো জিকোরা। শেষ বাঁশি বাজার আগে এক হালি গোল ঢুকেছে বাংলাদেশের জালে।

বাছাই পর্বে সবগুলো ম্যাচেই বাংলাদেশের রক্ষণভাগের দুর্বলতা ছিল চোখে পড়ার মতো। আক্রমনভাগেও ওয়ান টু ওয়ান পজিশনে স্ট্রাইকাদের ব্যার্থতা বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিয়েছে অনেকখানি।

তিন ম্যাচে প্রাপ্তি বলতে দুইটা গোল। এছাড়া বাংলাদেশের ভুলের তালিকা করলে সেটা অনেক লম্বাই হওয়ার কথা। তিন ম্যাচে আট গোল হজম করেছে বাংলাদেশ, বিপরীতে ফিরিয়ে দিতে পেরেছে মাত্র দু’টি। কোনো জয় না পাওয়ায় খালি হাতেই দেশে ফিরবেন জামাল-জিকোরা।

 স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি 



শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

তিন দেশের ২২ শহরে বসবে ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ

তিন দেশের ২২ শহরে বসবে ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ

২০২৩ এশিয়ান কাপ ফুটবলে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো ভারত

২০২৩ এশিয়ান কাপ ফুটবলে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো ভারত

ফুটবলে ‘থ্রো ইনের’ বদলি হতে পারে ‘কিক ইন’

ফুটবলে ‘থ্রো ইনের’ বদলি হতে পারে ‘কিক ইন’

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে যেসব ব্যক্তিগত মাইলফলকের সামনে তামিম

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে যেসব ব্যক্তিগত মাইলফলকের সামনে তামিম